চণ্ডীতলা, 28 জানুয়ারি: পুজো থেকে শুরু করে বিয়েবাড়ির মতো যেকোনও অনুষ্ঠান মিষ্টি বাধ্যতামূলক ৷ সেখানে শেষ পাতে যদি পরে রাবড়ির মতো রসালো মিষ্টি ৷ তাহলে তো কথাই নেই ৷ হুগলির চণ্ডীতলার আঁইয়া গ্রামকে রাবড়ি হাব বলা যেতে পারে ৷ এই গ্রাম লোকমুখে ‘রাবড়ি গ্রাম’ নামেও পরিচিত (Special Nolen Gur Rabri of Ainya Rabri Gram) ৷ এই আঁইয়া গ্রামে একশোর বেশি বাড়িতে রাবড়ি তৈরি হয় ৷ তাঁদের জীবনজীবিকার প্রধান অঙ্গই হল এই রাবড়ির ব্যবসা ৷ আর শীতের মরশুমে চিনির রাবড়ির পাশাপাশি, তৈরি হচ্ছে নলেন গুড়ের সুস্বাদু রাবড়ি ৷ পুরো আঁইয়া গ্রামের বাতাসে এই সময় ভেসে থাকে নলেন গুড়ের রাবড়ি সুগন্ধ ৷
রাবরি গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে দিনে 20-30 কিলো রাবড়ি তৈরি হয় ৷ এই রাবড়ির অধিকাংশটাই যায় মিষ্টির দোকানে ৷ আবার কিছু রাবড়ি বাইরে থেকে লোকজন এসে কিনে নিয়ে যান সস্তায় পাওয়ার আশায় ৷ আগে কাঠের উননের আঁচে লিটার লিটার দুধ জাল দিয়ে তৈরি হত রাবড়ি ৷ এখন গ্যাসের আগুনে আরও দ্রুত তৈরি করা হয় রাবড়ি ৷ কড়াইয়ে 7-8 লিটার দুধ জাল দিয়ে রাবড়ি তৈরি করেন ব্যবসায়ীরা ৷ উল্লেখ্য এর জন্য কোনও কারিগর ব্যবহার করেন না তাঁরা ৷
রাবড়ি তৈরির পদ্ধতি:দুধ জাল দেওয়ার সময় যে সর পড়ে, তা দিয়ে কড়াইয়ের গায়ে আস্তরণ তৈরি করা হয় ৷ এক বিশেষ বাঁশের কাঠি দিয়ে দুধের উপর থেকে সেই সর তুলে কড়াইয়ে গায়ে আস্তরণ তৈরি করা হয় ৷ সেই সঙ্গে হাত পাখা দিয়ে অনবরত হাওয়া করে যেতে হয় ৷ যাতে দুধের উপরে মোটা সর পড়ে এবং কড়াইয়ের আস্তরণ জমাট বাঁধে ৷ এক থেকে দেড় লিটার দুধ কড়াইয়ে থাকার সময় সেটিকে গ্যাস থেকে নামিয়ে ফেলা হয় ৷ কিছুটা ঠান্ডা হয়ে এলে ওই এক-দেড় লিটার দুধে চিনির রস মেশানো হয় ৷ আর নলেন গুড়ের রাবড়ি হলে, দুধে গুড় মেশানো হয় ৷ এর পর কড়াইয়ের গায়ে সরের যে মোটা আস্তরণ তৈরি হয়, সেটিকে পিস পিস করে কেটে দুধে মেশানো গুড় বা চিনির রসে ডুবিয়ে দেওয়া হয় ৷