হুগলি, 3 মার্চ : মুরগির মাধ্যমে কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণের গুজব ছড়িয়ে পড়েছে সোশাল মিডিয়ায় ৷ তাই বিক্রি কমেছে মুরগির মাংসের। আর এর ফলেই ক্ষতিগ্রস্ত চাষি থেকে ব্যবসায়ীরা । মুরগির মাংস বিক্রি কমার পাশাপাশি কমেছে দাম । এর ফলে দাম বাড়ছে বাড়ছে মাছ ও অন্যান্য মাংসের।
এই পরিস্থিতির ফলে আখেরে ক্ষতি হচ্ছে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষের । বর্তমানে মুরগির মাংস মানুষের খাদ্যের অনেকটাই পরিপূরক হিসেবে কাজ করে । কিন্তু বেশ কয়েক মাস ধরে মুরগির কোরোনা ভাইরাস ও মরফিন জাতীয় বিভিন্ন ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার রটনায় বিপাকে পড়েছে ক্রেতা ও বিক্রেতারা । বাজারের এই অবস্থার কথা মাথায় রেখে পোলট্রি মালিক ও ব্যবসায়ীরা মুরগি চাষ প্রায় বন্ধ করে দিতে বসেছেন। নতুন করে মুরগির প্রতিপালন করাতে চাইছেন না পোলট্রি ব্যবসায়ীরা । তাঁরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সেই সঙ্গে এই পোলট্রি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষ অসুবিধার মুখে পড়ছেন।
এই বিষয়ে প্রাণীসম্পদ দপ্তরের চিকিৎসক জয়জিৎ মিত্র বলেন, "মরফিন ভাইরাস বলে যে ভাইরাসের কথা রটছে সে ভাইরাসের কোনও অস্তিত্ব আছে বলে আমাদের জানা নেই । অন্যদিকে কোরোনা ভাইরাস কখনওই মুরগির মাধ্যমে ছড়ায় না কারণ মুরগির কোরোনা সংক্রমণ হয় না । গুজবে কান না দিয়ে নিশ্চিন্তে খাওয়া যেতে পারে । ব্যবসায়ী এবং চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন । এটা মানুষকে বোঝাতে হবে অথবা বাজারে বাজারে গিয়ে প্রচার করতে হবে। এছাড়া এই সমস্যা সমাধানের কোনও উপায় নেই । প্রয়োজনে মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার করতে হবে যে একমাত্র বার্ড ফ্লুর ক্ষেত্রে মুরগির মাংস খাওয়া বন্ধ করা হয়, কারণ একমাত্র ওই রোগই মুরগির মাধ্যমে ছড়ায় এবং মানুষেরও হতে পারে ।"
পোল্ট্রি ব্যবসায়ী রবি হালদার বলেন, "মুরগির মাংসের ব্যবসার যা পরিস্থিতি তাতে আমাদের আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনও উপায় নেই। কোরোনা ভাইরাসের যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সেটা সম্পূর্ণ গুজব । আমি দীর্ঘ 35 বছর এই মুরগি উৎপাদন করছি। আমি কোনওদিন এসব শুনিনি । মুরগির যে সমস্ত রোগ হয় সেটা ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা যায়। সোশাল মিডিয়ায় কোনও একটা স্বার্থের জন্য গুজব ছড়ানো হচ্ছে । তার জন্যই আমরা সমস্যায় পড়ছি । মুরগি উৎপাদনে পশ্চিমবঙ্গ অন্যতম স্থানে রয়েছে। পরিকল্পিতভাবে এই গুজব রটিয়ে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য শেষ করার ষড়যন্ত্র চলছে। যে মেহনতি মানুষেরা এই ব্যবসা করে আয় করছেন তাঁদের আর্থিক অনটনে পড়তে হচ্ছে কারণ উৎপাদন করে বিক্রি হচ্ছেনা । 50,000 টাকার মুরগি উৎপাদন করে ন্যূনতম 20 হাজার টাকা আয় হয় । এই গুজবের ফলে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে । সরকার ও প্রশাসনের উচিত গুজব বন্ধ করতে পদক্ষেপ করা। "