বলাগড়, 3 অগস্ট: পুরো বলাগড়ে 9টি পঞ্চায়েত ভাঙনপ্রবণ এলাকা রয়েছে। আর এই ভাঙনের আশঙ্কা দিন কে দিন বেড়েই যাচ্ছে (River Erosion Increasing Due to Illegal Digging)। গঙ্গার পারের কৃষি জমি থেকে ঘরবাড়ি সবই তলিয়ে যাচ্ছে। গঙ্গা ভাঙন রোধের জন্য কয়েক কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। কিন্তু যেখানে ভাঙনের জন্য মাটির বস্তা দিয়ে বাঁধ দেওয়া হচ্ছে সেখানেই অবৈধ ভেরি কাটা হয়েছে। সেই সঙ্গে একশো দিনের একটি পুকুর কাটা হয়েছিল। সেখান থেকেও মাটি কাটা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ব্লক ভূমি সংস্কার দফতর (সাধারণ) মামলা দায়ের করে। তবে কারুর নামে অভিযোগ হয়নি। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন 90 লক্ষ টাকার পুরো ভেরির মাটি চুরির সঙ্গে কারা যুক্ত ? আর এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তদন্ত শুরু করেছে বলাগড় থানার পুলিশ। অন্যদিকে, জিরাটে চর খয়রামারী স্কুলের পাশে যে ভাঙন তা নিয়ে মামলা ইতিমধ্যেই আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:স্বাধীনতার 75 বছরেও রাস্তা কাঁচাই, মালদা-বালুরঘাট সড়কে অবরোধ গ্রামবাসীদের
জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চর খয়রামারি গঙ্গার ধারে 50 মিটারের মধ্যেই এই বেআইনি ভেরি কাটা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন, জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েত, বলাগড় ব্লক প্রশাসন থেকে পুলিশ কেউই টের পায়নি। বিষয়টি স্থানীয় মানুষ জানলেও কেউই বুঝতে পারেননি। কারণ সামনেই গঙ্গার ভাঙনের সরকারি কাজ হচ্ছে। কারুর মনে প্রশ্ন উঠলেও অভিযোগ জানানোর ব্যাপারে ভাবেনি কেউই।
গত কয়েকদিন আগে আদালত স্পেশাল টিম স্কুলের ভাঙন দেখতে আসে। বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী ভাঙনের কাজ দেখতে এসে ভেরি কেটে মাটি চুরির ব্যাপারে প্রশ্ন তোলেন। বিধায়ক মাটি, বালি চুরির ব্যাপারে তৎপর। সেই কারণে গঙ্গার ভাঙন প্রবণ এলাকায় কীভাবে এই ধরনের ভেরি কাটা হচ্ছে? সরকারি তরফে কোনও অনুমতি আছে কি না বা রয়্যালটি দেওয়া হয়েছে কি না তা প্রশাসনকে খতিয়ে দেখতে বলেন। তারপরই ব্লক প্রশাসন নড়ে চড়ে বসে।
ভাঙন এলাকায় অবৈধ ভেরি খনন করে মাটি পাচার হচ্ছে বলাগড় ভূমি সংস্কার দফতর (সাধারণ) অভিযোগ করে থানায়। ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিককেও অভিযোগ পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু কে এই 80 থেকে 90 লক্ষ টাকার মাটি কেটেছে কেউ জানে না। চর খয়রামারীতে 10 ফুট গভীর 4 বিঘা খাস জমির উপর এই ভেরি কাটা হয়েছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছে বলাগড় থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন:উল্টোডাঙা উড়ালপুলে ফের বড় ফাটল, ঘটনাস্থলে কেএমডিএ আধিকারিকরা
বলাগড় বিডিও নীলাদ্রি সরকার জানিয়েছেন, আগে জানা যায়নি ঘটনাটি। অভিযোগের সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত শুরু হয়েছে। কোনও রয়্যালটি দেওয়া হয়নি। যদি ভাঙনের জন্য মাটির প্রয়োজন হয় তাহলে সরকারিভাবে কেন জানানো হয়নি। গঙ্গার কাছে এভাবে মাটি কাটতে কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এটা কীভাবে হল। মাটি কাটার সময় কেউ অভিযোগেও করেনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অশোক পোদ্দার বলেন, "আমরা ভাঙন প্রবণ গঙ্গার পাশে মাটি কাটার কথা জানি না। প্রশাসন তদন্ত করুক।"