পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

পেঁয়াজের আগুনে দামে জল ঢালতে বর্ষাকালীন চাষই রাস্তা, তবু উদাসীনতা

বিকল্প চাষের কথায় মাথায় রেখেই 2014 সালে বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষ শুরু হয় । চাষিদের অভিযোগ, গত দু'বছরে সরকারি উদাসীনতায় সামান্যই হচ্ছে সেই চাষ । আরও বেশি করে সহযোগিতা চাইছেন তাঁরা ।

Rainfed farming is only way to reduce onion price
Rainfed farming is only way to reduce onion price

By

Published : Oct 1, 2020, 8:20 PM IST

হুগলি, 30 সেপ্টেম্বর : বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের দাম । চাহিদার তুলনায় বাজারে পেঁয়াজ কম, সে কারণেই এতখানি মূল্য বৃদ্ধি । হুগলির খুচরো বাজারে বর্তমানে পেঁয়াজের দাম 60 টাকা কেজি । দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে ৷ অথচ, গত বছরেই পেঁয়াজের উপযুক্ত দাম না পেয়ে আত্মহত্যা করেন বলাগড়ের এক চাষি ৷ উল্লেখ্য, রাজ্যে একমাত্র বলাগড়েই আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন পেঁয়াজের চাষ হয় । যদিও সেই পেঁয়াজেও যোগানেও সামলানো যাচ্ছে না চাহিদা ৷ বিশেষজ্ঞদের মত, সংরক্ষণের অভাবেও পিঁয়াজের চাহিদা বাড়ছে । অন্যদিকে, লকডাউনে নাসিক থেকে পেঁয়াজ না আসায় রাজ্যে পেঁয়াজের দাম বেড়ে চলেছে । যদিও বিকল্প চাষের কথায় মাথায় রেখেই 2014 সালে বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষ শুরু হয় রাজ্যে । কিন্তু অভিযোগ, গত দু'বছরে সরকারি উদাসীনতায় সামান্যই হচ্ছে সেই চাষ । চাষিদের দাবি, অতি বৃষ্টি ও পরিকাঠামোর অভাবে বর্ষায় পেঁয়াজ চাষ করা যাচ্ছে না । আরও বেশি সরকারি সহযোগিতা চাইছেন তাঁরা ।

সরকারি উদাসীনতায় সামান্যই হচ্ছে বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষ ৷

হুগলি জেলার বলাগড়ের মাটি পেঁয়াজ চাষের জন্য উপযুক্ত । এখানে সুখসাগর প্রজাতির পেঁয়াজের চাষ হয় । এখানেই বীজ তৈরি হয় । নম্ভেম্বর মাসে চাষ শুরু হয় । তিন থেকে চার মাস পরে পেঁয়াজ উঠতে শুরু করে । সেই পেঁয়াজ মাঠে থেকেই বিক্রি করে বহু চাষি । তাতে দাম কম মেলে । বরং সংরক্ষণ করে পরে বাজার অনুযায়ী ছাড়লে ভালো দাম মেলে । যদিও সংরক্ষণে নানা সমস্যা থাকায় বেশিদিন রাখা যায় না বলাগড়ের পেঁয়াজ । সরকারি উদ্যোগে চাষিদের বাড়িতেই পেঁয়াজ সংরক্ষণের ঘর করা হয় । এখনও পর্যন্ত এলাকায় এমন 300টি পেঁয়াজ-ঘর করা হলেও তা যথেষ্ট নয় । এমত অবস্থায় বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষই একমাত্র রাস্তা ৷

বর্ষার পেঁয়াজের জাত আলাদা । এগ্রিফাউন্ড ডার্ক রেড বীজে চাষ হয় বর্ষায় । তাছাড়া এই সময় চাষের জন্য উঁচু জমি প্রয়োজন । নিকাশি ব্যবস্থা ভালো থাকতে হবে । সেই সঙ্গে অতি বৃষ্টি থেকে চারাগাছ বাঁচতে পারলে তবেই চাষ সম্ভব । এই কারণেই প্রয়োজন হয় পলি হাউজ়ের ৷ ফলে খরচও বেশি । দরকার সরকারি ভর্তুকি । সরকার পলি হাউজ়ের ভর্তুকি দেওয়া শুরু করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য ।

বলাগড়ের এক চাষি অসিত নায়েক বলেন, "বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষ করতে গেলে পলি হাউজ় ছাড়া চলবে না । গতবছর বীজ ফেলেও নষ্ট তা হয়েছে । দ্বিতীয় বাড়ে ফলন হয় । তবে গাছ-পেঁয়াজ বেচতে হয়েছিল । এবছর তিনবার বীজ ফেলা হলেও তিনবারই নষ্ট হয়েছে ৷"

বলাগড়ের কৃষি আধিকারিক সোমনাথ পাল বলেন, "বর্ষাকালীন পেঁয়াজ 2014 সালের পর থেকেই করা হচ্ছে । এই পেঁয়াজ হলে পুজোর সময় পেঁয়াজের দাম বাড়া অনেকটাই লাঘব করা সম্ভব ।"

তবে তিনি এও জানান, "বর্ষাকালের চাষে পেঁয়াজে চাষিদের উৎসাহ কম ৷ কারণ বৃষ্টিতে চারা নষ্ট হয় । তবে, চাষিদের জন্য উদ্যান পালন বিভাগ ও কৃষি বিপণন বিভাগের তরফে পলি হাউজ়ে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে । ফসল সরক্ষণেও জোর দেওয়া হচ্ছে ।"

তবে তা যে প্রয়োজনের তুলনায় কম, সে কথা অস্বীকার করেননি কৃষি আধিকারিক ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details