চুঁচুড়া, 1 মার্চ: মালিকের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে জমি দখলের চেষ্টা প্রোমোটারের ৷ অভিযোগ সামনে আসতেই সেই প্রোমোটারকে আড়ালের চেষ্টা জেলা তৃণমূল সভাপতির (Promoter allegedly try to grab land at gunpoint) ৷ পুরো বিষয়টি নিয়ে অনলাইনে অভিযোগ জমা পড়ল চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটে ৷ যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার জেলা তৃণমূল সভাপতির ৷
এলাকার প্রোমোটার শ্রীকান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে সম্প্রতি মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে একজনের জমি রেজিস্ট্রি করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে ৷ ওই জমির মালিকের অভিযোগ, প্রমোটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশকে ফোন করে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হয় ৷ আর সমস্ত বিষয়টি পিছন থেকে কলকাঠি নাড়ছেন হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি অরিন্দম গুঁইন। ঘটনাটি নিয়ে আসরে নেমে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি।
জানা গিয়েছে, ধনিয়াখালির বাসিন্দা সুজিত কুমার ভট্টাচার্যের তিন বিঘা জমি বিক্রির কথা হয় শ্রীকান্ত ঘোষ নামে শ্রীরামপুরের এক প্রোমোটারের সঙ্গে। সুজিত বাবুর অভিযোগ, প্রোমোটার যে দাম দিচ্ছিল তাতে তিনি রাজি ছিলেন না। তবু তাঁকে জমি বিক্রি করতে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। মঙ্গলবার চুঁচুড়া আদালতে একটি কাজে এসেছিলেন তিনি। বাড়ি ফেরার সময় সুজিতবাবুকে সাত-আটজন মিলে ঘিরে ধরে আদালত চত্বরে। তার মাথায় বন্দুক ঠেকানো হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে বলে জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে হবে। চুঁচুড়া আদালতের পাশেই রয়েছে রেজিস্ট্রি অফিস। সেখানে তাঁকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়।
সুজিতবাবুর গাড়ি চালক বিষয়টি দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। চুঁচুড়া থানার পুলিশ সেখানে পৌঁছে জমির মালিক এবং প্রোমোটার দু'জনকেই চুঁচুড়া থানায় নিয়ে আসা হয় ৷ সারাদিন গিয়ে সন্ধের পর ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেন সুজিত ভট্টাচার্য। ভরা আদালত চত্বরে বন্দুক ঠেকানোর অভিযোগ কতটা সত্যি, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গতকাল রাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয় চুঁচুড়া থানায়। যদিও অভিযুক্ত প্রোমোটারের কাছ থেকে কোনও বন্দুক মেলেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ। অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়। সুজিত বাবুর আইনজীবী এরপর অভিযোগ জানাতে যান চন্দননগর কমিশনারেটের। কিন্তু স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক ও জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইনের তরফে অভিযোগ না-নেওয়ার নির্দেশ আসে।
আরও পড়ুন:গোঘাটে মাঠের পর মাঠ জুড়ে চলছে বেআইনি পোস্ত চাষ, নির্বিকার প্রশাসন
জমির মালিক সুজিত ভট্টাচার্য জানান, ড্রাইভারের মাধ্যমে পুলিশকে ফোন করে দু'পক্ষকে চুঁচুড়া থানায় নিয়ে আসা হয়। চাঁপদানির বিধায়ক ও তৃণমূলের জেলা সভাপতির ফোন আসতেই প্রোমোটারকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আমার অভিযোগ মত এফআইআর নেওয়া হলে আমি স্বাক্ষর করব বলে জানিয়ে দিয়েছি পুলিশকে। এ বিষয়ে বিজেপি নেতা স্বপন পাল বলেন, "চুঁচুড়া আদালতের সামনে যে বড় ঘটনা ঘটছে তাতে আবার প্রমাণিত হচ্ছে রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। সবচেয়ে বড় কথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি কীভাবে একজন প্রোমোটারকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। এভাবে আড়াল করার চেষ্টা দুর্ভাগ্যজনক। এখানে শাসক যা বলবে তাই হবে। এতো বড় ঘটনা ঘটছে তাকে অনলাইনের মাধ্যমে অভিযোগ করতে হচ্ছে। যদিও জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ৷