পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Baidyabati-Dankuni Canal: বৈদ্যবাটি-ডানকুনি খাল সংস্কারের কৃতিত্ব নিয়ে পোস্টার রাজনীতি - বৈদ্যবাটি ডানকুনি খাল

বৈদ্যবাটি-ডানকুনি খালের 22.39 কিলোমিটার অংশ সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে ৷ বৈদ্যবাটি অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পর, এই খাল সংস্কার শুরু হচ্ছে ৷ কিন্তু, সেখানেও চাঁপদানির বিধায়ককে কৃতিত্ব দিয়ে পোস্টার লাগানোয় শুরু হয়েছে বিতর্ক (TMC Credit for Baidyabati-Dankuni Canal Renovation Work) ৷

posters-claim-tmc-credit-for-baidyabati-dankuni-canal-renovation-work
posters-claim-tmc-credit-for-baidyabati-dankuni-canal-renovation-work

By

Published : Dec 12, 2022, 7:53 PM IST

বৈদ্যবাটি-ডানকুনি খাল সংস্কারের কৃতিত্ব নিয়ে পোস্টার রাজনীতি

বৈদ্যবাটি, 12 ডিসেম্বর: বৈদ্যবাটি-ডানকুনি খাল (Baidyabati Dankuni Canal) সংস্কার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করেছেন স্থানীয় মানুষজন ৷ অভিযোগ ছিল, খাটালের গোবর মাটি পড়ে খালের নাব্যতা কমে গিয়েছে ৷ কোথাও আবার খাল পুরোপুরি বুজে গিয়েছে ৷ সম্প্রতি সেই খাল সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে ৷ কিন্তু সেই সংস্কারের কৃতিত্ব দাবি করে পোস্টার লাগানোর অভিযোগ চাঁপদানি বিধানসভার বিধায়ক অরিন্দম গুঁইনের বিরুদ্ধে ৷ আর সেই পোস্টারকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর ৷ বিরোধী এমনকী তৃণমূলের অন্দরেও খাল সংস্কার নিয়ে বিধায়কের কৃতিত্ব দাবি করে পোস্টার লাগানোয় অসন্তোষ দেখা দিয়েছে (TMC Credit for Baidyabati-Dankuni Canal Renovation Work) ৷

দীর্ঘদিন ধরে বৈদ্যবাটি-ডানকুনি খালের সংস্কারের দাবি তুলেছিলেন স্থানীয়রা ৷ এ নিয়ে একাধিক আন্দোলন ও ডেপুটেশন জমা দেন বৈদ্যবাটি এলাকার মানুষ ৷ তাদের দাবি ছিল, বৈদ্যবাটি থেকে বালি পর্যন্ত খালের মজে যাওয়া অংশ সংস্কার করতে হবে ৷ আর খালের পাশে থাকা খাটালগুলিকে অন্যত্র সরাতে হবে ৷ কারণ খালের থেকে গোবর ও অন্যন্য ময়লা ফেলেই খাল বুজিয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷ সেই আন্দোলনে বিরোধী বিজেপি, এমনকি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বও সামিল হয়েছিল ৷ সম্প্রতি সেই খাল সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে ৷ কিন্তু, অভিযোগ উঠেছে সাধারণ মানুষের আন্দোলনের ফলকে নিজের কৃতিত্ব বলে চালাচ্ছেন চাঁপদানির বিধায়ক ৷ সে কারণেই অরিন্দম গুঁইনের নামে পোস্টার পড়েছে এলাকায় ৷ সেখানে লেখা, খাল সংস্কারে প্রধান উদ্যোগী বিধায়ককে অভিনন্দন ৷

তবে, এ নিয়ে বিধায়কের দাবি, তিনি বা তাঁর লোকজন কেউ ওই ফ্লেক্স লাগাননি ৷ কেউ ভালোবেসে সেই ফ্লেক্স লাগিয়ে থাকতে পারেন বলে দাবি করেছেন বিধায়ক ৷ তবে এই খাল সংস্কারে খরচ হওয়া টাকার অংক নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে ৷ কারণ বিধায়কের দাবি খাল সংস্কারের জন্য 18 কোটি টাকা খরচ হচ্ছে ৷ কিন্তু প্রশাসনিক সূত্রে খবর, সাড়ে 7 কোটি টাকার টেন্ডার পাশ হয়েছে বৈদ্যবাটি-ডানকুনি খালের 22.39 কিলোমিটার অংশ সংস্কারের জন্য ৷ আর সেই নিয়েও গড়মিলের অভিযোগে সরব হয়েছে রাজ্যের বিরোধী দল ৷

বিজেপি নেতা শ্রেয়াংশু মহন্ত বলেন, "এই খাল সংস্কার সরকারি টাকায় হচ্ছে ৷ তার জন্য ফ্লেক্স লাগিয়ে, পোস্টার ফেলে নিজের ঢাক নিজে পেটানোর কোন প্রয়োজন নেই ৷ এটা সম্পূর্ণ রাজনীতি ৷ সংস্কারের কথা বলছে, এদিকে বৈদ্যবাটি খালের বেশিরভাগ অংশ দখল হয়ে গিয়েছে ৷ বৈদ্যবাটি থেকে ডানকুনি পর্যন্ত খাটালের গোবর খালে এসে পড়ছে ৷ আমার আপনার দেওয়া সরকারি টাকা দিয়ে এই খাল সংস্কার সম্পূর্ণটাই জলে যাবে ৷ আর খাল সংস্কারের নামে মাটি তুলে বিক্রি করা হবে ৷ 18 কোটি টাকার খরচের কথা বলা হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা ৷ এই খাল সংস্কারের আগে দখলমুক্ত করুক ৷ তাহলে প্রতিটি মানুষের উপকার হবে ৷"

আরও পড়ুন:সংস্কারের অভাবে মজে ডানকুনি ও সরস্বতী খাল, বারোমাস জলযন্ত্রণা পৌর এলাকায়

তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সুরদর্শন বরের দাবি, "এখন উনি বিধায়ক ঠিকই ৷ কিন্তু সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আগে থেকেই এর কাজ শুরু করেছেন ৷ টাকা খরচ করে সংস্কার হচ্ছে ৷ কিন্তু, খাটালগুলির কারণে আবার একই পরিণতি হবে ৷"

খাল সংস্কার নিয়ে ফ্লেক্স লাগানোর বিষয়টির সমালোচনা করেছেন বাম নেতা নরেন চট্টোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, "কোন একক জনপ্রতিনিধিদের জয় নয় ৷ দীর্ঘদিনের লড়াইয়ে সিঙ্গুর ও ডানকুনি এলাকার কৃষকদের জয় ৷ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের অর্থ বরাদ্দে কাজ হচ্ছে ৷ কতটা কার্যকরী হবে, সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে ৷ কারণ, এই খাল রেল এবং জাতীয় সড়কের নিচ দিয়ে গিয়েছে ৷ সেটা সংস্কার না হলে, তা সম্পূর্ণ হবে না ৷

আর যাঁকে নিয়ে এত বিতর্ক, সেই চাঁপদানির বিধায়ক অরিদম গুঁইন বলেন, "এই খালের সংস্কার মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদা ছিল ৷ এটা সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরেই জল জমে থাকত বিভিন্ন এলাকায় ৷ খাটাল একটা সমস্যা ঠিকই ৷ কিন্তু প্রশাসনিক তরফে আলোচনা হয়েছে ৷ খাটাল মালিকদের সঙ্গে কথাবার্তা হয়েছে ৷ ইতিমধ্যে, এই কাজের জন্য 18 কোটি টাকার মতো খরচের পরিকল্পনা রয়েছে ৷ আপাতত 8-9 কোটি টাকার টেন্ডার জমা পড়েছে ৷ সরকার কাজটা করাচ্ছে ৷ এই ফ্লেক্স লাগানোর কাজ আমাদের কেউ করেনি ৷ কেউ ভালোবেসে এই ফ্লেক্স লাগিয়েছে ৷"

ABOUT THE AUTHOR

...view details