ব্যান্ডেল, 30 জুন : রাজনৈতিক কারণ নাকি প্রমোটারি চক্র ? ব্যান্ডেলের তৃণমূল নেতা দিলীপ রাম খুনের ঘটনায় উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন ।
শনিবার সকালে ব্যান্ডেল স্টেশনে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন তৃণমূল নেতা দিলীপ রাম । এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে BJP-র দিকে আঙুল তুলেছ তৃণমূল কংগ্রেস । যদিও খুনের বিষয়টিকে নেহাতই রাজনৈতিক হত্যা বলে মনে করছে না তদন্তকারীদের একাংশ । কারণ , দিলীপের ব্যক্তিগত জীবন ও কাজকর্মের বিষয়টি তদন্তকারীদের সন্দেহ বাড়িয়েছে ।
প্রমোটারিই ছিল দিলীপের অন্যতম পেশা । জমি কেনাবেচা শুধু নয়, পুকুর বুজিয়ে ফ্ল্যাট তৈরি করার ক্ষেত্রে তাঁর বিকল্প তেমনভাবে এলাকায় ছিল না । প্রমোটারির দৌলতে টাকা পয়সা রোজগারও মন্দ ছিল না । আবার, এলাকার বেশ কিছু সমাজ বিরোধীর সঙ্গে ওঠাবসাও ছিল তাঁর । তেমনই ছিল শত্রুতাও । যেমন ব্যান্ডেলের কুখ্যাত দুষ্কৃতী লালার সঙ্গে দিলীপের ছিল আদায় কাঁচকলায় সম্পর্ক । দিলীপের স্ত্রী নিতু সিংয়ের দাবি, বেশ কয়েকবার তাঁর স্বামীর উপর হামলা হয়েছিল । তবে , সে যাত্রায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান দিলীপ ।
এই সংক্রান্ত আরও খবর : ব্যান্ডেলে দুষ্কৃতীদের গুলিতে তৃণমূল নেতা খুন, বনধের ডাক তৃণমূলের
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন দিলীপের বাড়বাড়ন্ত মূলত 2011 সালের পর থেকে । সে বছরই ব্যান্ডেল পঞ্চায়েতের প্রধান হন দিলীপের স্ত্রী নিতু । পরিবারের একাধিক সদস্য রেলের চাকরি পেয়ে যান । বিষয়টি কখনই সহজ চোখে নেয়নি দিলীপের শত্রুরা । এলাকাবাসীদের দাবি, নিজের রাজনৈতিক প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে অনেক আত্মীয়কে রেলের চাকরিও করে দিয়েছিলেন দিলীপ । আবার , প্রধান হওয়ার পর স্ত্রী'র প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে পঞ্চায়েতের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিজের দখলে এনেছিলেন দিলীপ । এলাকাবাসীদের দাবি, পঞ্চায়েতের খরচে যে কোনও কাজ হলেই সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যেত এই তৃণমূল নেতাকে ।
আবার, এ প্রসঙ্গে উঠে আসছে, হুগলির সামগ্রিক ভোট চিত্রের ফল । এবার, লোকসভা ভোটে হুগলিতে তৃণমূলের ভরাডুবি হয়েছে । দলের শোচনীয় ব্যর্থতার পর হুগলির সংগঠনকে ঢেলে সাজার পরিকল্পনা নেয় তৃণমূল । বেশ কিছু নেতার পদ বদল করা নিয়েও আলোচনা শুরু হয় । তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, ব্যান্ডেলের নেতৃত্ব বদলের বিষয়টি নিয়েও বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । উঠে আসছিল নেতৃত্ব বদলের প্রসঙ্গও । আর তা নিয়ে দলের একাংশের সঙ্গে মতবিরোধ তীব্র হচ্ছিল দিলীপের । এই খুন কোনও রাজনৈতিক চক্রান্ত ফল কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।
যদিও, বিষয়টি নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে চায়নি পুলিশ । প্রাথমিকভাবে তারা জানিয়েছে তদন্তের পরই উঠে আসবে আসল তথ্য ।