বৈদ্যবাটি, 18 জানুয়ারি: আবাস যোজনা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি । একাধিক অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে । এর মধ্যে নতুন করে আবাস যোজনার টাকা না ঢোকায় ভোগান্তি মধ্যে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে । আবাস যোজনার (PM Awas Yojana Scheme) ঘরের কাজ শুরু হলেও সরকারি টাকা না আসায় আটকে গিয়েছে কাজ । তার জেরে ভোগান্তির মুখে বৈদ্যবাটির সত্তরোর্ধ্ব মহিলা ।
ভোগান্তিতে উপভোক্তারা: শুধু তিনি নন । একশোর উপর মানুষ এখন ভোগান্তির মুখে । বৈদ্যবাটি পৌরসভার 20 নম্বর ওয়ার্ডে লাহানগরে অমানবিক ছবি ধরা পড়ল ইটিভি ভারতের ক্যামেরায় । পঁচাত্তর বছর বয়সি যমুনাবালা দাস এখন অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন । ক্লাবের এক ছোট ঘরে ত্রিপল খাটিয়ে কোনওরকমে বাস করছেন দীর্ঘ আট মাস ধরে । আবাস যোজনার বাড়ি ভেঙে নতুন করে কাজ শুরু হলেও, অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে । পৌরসভাকে বাড়ে বাড়ে জানানো সত্বেও কোন প্রতিকার হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন যমুনাবালা । কনকনে ঠান্ডার মধ্যে তিনি ও তাঁর পরিবার ত্রিপল খাটিয়ে কোনওরকমে চালাচ্ছেন । এমনকী তাদের সেরকম স্বচ্ছল অবস্থা নেই যে এই ঘর করে নেবেন । তাঁর দাবি, অবিলম্বে ঘর করার জন্য টাকা দিক সরকার ।
রাজ্য ও কেন্দ্রের টানাপোড়ন: যদিও আবাস যোজনার টাকা নিয়ে টালা বাহানা চলছে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে । আর এর জন্যই ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে যমুনাবালার মতো কয়েকশো সাধারণ মানুষকে বলে মনে করছেন এলাকাবাসীরা । এই ওয়ার্ডের 50 জন মানুষের এখন একই পরিস্থিতি । পৌরসভার চেয়ারম্যানের দাবি, কেন্দ্রের টাকা না আসার ফলে এই ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে উপভোক্তাদের । এখানে তাঁর কোন দোষ নেই । তবে বিজেপির দাবি, চেয়ারম্যান ও সরকারের দোষের কারণে সাধারণ মানুষ এখন সমস্যায় । উপভোক্তাদের উচিত পৌরসভা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো । এটা সম্পূর্ণ রাজ্যের ব্যর্থতার কারণে হয়েছেও বলে বিজেপির মত ।
সবার জন্য বাড়ি প্রকল্প: প্রশাসন সূত্রের খবর, পৌর এলাকার গরিব মানুষদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ‘সবার জন্য বাড়ি’ (হাউস ফর অল) প্রকল্প রয়েছে । বাড়ি তৈরিতে মোট খরচ 3 লক্ষ 68 হাজার টাকা । এর মধ্যে উপভোক্তাকে দিতে হয় 25 হাজার টাকা । বাকি টাকা কেন্দ্র চারটি কিস্তিতে দেয় । বৈদ্যবাটি পৌরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, 23টি ওয়ার্ডে 2018-19 অর্থবর্ষে অনুমোদিত হওয়া মোট 720টি বাড়ি তৈরির কাজ চলছে এই প্রকল্পের । প্রথম কিস্তিতে উপভোক্তা পরিবারগুলি 50 হাজার টাকা করে পায় । তার পরে পরিবারকে দ্বিতীয় কিস্তিতে এক লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে । উপভোক্তাদের অভিযোগ, আর কোনও টাকা না আসায় 8-9 মাস ধরে বাড়ির কাজ থমকে রয়েছে । ফলতো চরম ভোগান্তির মুখে একাধিক পরিবার ।