চুঁচুড়া, 30 সেপ্টেম্বর: সন্তানের ভরণপোষন করতে অক্ষম মা । তাই বাধ্য হয়ে সদ্যজাত শিশুকে দান করে দিলেন তিনি, তুলে দিলেন চুঁচুড়ার এক নিঃসন্তান দম্পতির হাতে । ঘটনাটি চুঁচুড়া থানার চ্যাটার্জি বাগান এলাকার । তবে সেই দম্পত্তি ওই শিশুটিকে দত্তক নিয়েছেন, তাঁরা জানিয়েছেন এর জন্য ওই মহিলাকে কোনও টাকা দেননি তাঁরা ৷ কেবল একশো টাকার একটি স্ট্যাম্প পেপারে লিখে স্বেচ্ছায় এই শিশুচিকে তাঁদের হাতে তুলে দিয়েছেন ওই অসহায় মহিলা ৷ তবে এইভাবে কোনও শিশুকে কী দত্তক নেওয়া যায় ? এই প্রশ্নের জবাবে ওই দম্পতি স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে তাঁরা এই কাজ করেননি ৷ এত নিয়মের কথাও তাঁরা জানেন না ৷ তাঁরা যা করেছেন একটি শিশুকে বাঁচাতে মানবিকতার খাতিরে করেছেন ৷ তাঁদের আশঙ্কা, শিশুটিকে তাঁরা না নিলে হয়তো তার মা শিশুটিকে ফেলে দিত, তাই শিশুটিকে মানুষ করতেই তাঁরা এই কাজ করেছেন ৷
জানা গিয়েছে, যে শিশুটিকে ওই দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে তার মা সুগন্ধার এক ইঁটভাটার এক শ্রমিক। আর্থিক সামর্থ না থাকাতেই তিনি শিশুটিকে মানুষ করতে পারবেন না বলে পরিচিত কয়েকজনকে জানিয়েছিলেন ৷ তাঁদের মাধ্যমে খবর পেয়েই শিশুটিকে নিতে উদ্যোগী হন ওই দম্পতি ৷ এই প্রসঙ্গে ওই দম্পতির দাবি, তাঁরা নিঃসন্তান ৷ ওই মহিলা শিশুটিকে মানুষ করতে পারবেন না এটা জেনেই তাঁরা ওই শিশুটিকে নিয়েছেন ৷ তাঁদের কথায়,"ওই মহিলা শিশুর দ্বায়িত্ব নিতে পারবেন না। তাই আমাদের কাছে মানুষ করার জন্য দিয়েছেন। যাতে কোন বিপদে না-পড়তে হয় তার জন্য কোর্ট পেপারে লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে ।"
তবে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত চুঁচুড়া থানায় লিখিত কোনও অভিযোগ হয়নি । শিশু বিক্রির কোনও অভিযোগ আসেনি ৷ কোদালিয়া দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দেবাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, শিশুটির মাত্র 8-9 দিন বয়স ৷ কিন্তু কোর্ট পেপারে এভাবে লিখে শিশু দত্তক নেওয়া যায় না ৷ এই দম্পতি হয়তো এই বিষয়টা জানতেন না ৷ তাই চেষ্টা করা হচ্ছে তাঁদের আইনি পরামর্শ দিয়ে, প্রশাসনের সহয়োগিতায় নিয়ম মেনে শিশুটিকে তাঁদের হাতে তুলে দিতে ৷ তবে দুধের শিশুটিকে এভাবে এখনই কেন তাঁর মায়ের থেকে নেওয়া হল, এই প্রশ্নও উঠছে ৷