সোশাল মিডিয়ার দাপটে শৈশব বিপন্ন মানকুণ্ডু, 21 নভেম্বর:চলছে জগদ্ধাত্রী পুজো, আজ নবমী ৷ গোটা চন্দননগর জুড়েই সাজ সাজ রব। থিমের ছোঁয়া থাকলেও এই পুজোর শেষ কথা বলে ঐতিহ্যই। তবুও পুজো কমিটিগুলি একে অন্যের সঙ্গে পাল্লা দিতে হরেক রকমের বৈচিত্র থিমের আয়োজন করে প্রত্যেক বছরই, এবারও তার ব্যাতিক্রম নেই। যন্ত্রের কবলে পড়ে মানুষ হচ্ছে যান্ত্রিক। তাই বালি মাটি দিয়ে অপরূপ দর্শনের মণ্ডপ নির্মাণ করে চমক দিল মানকুণ্ডু নতুনপাড়া জগদ্ধাত্রীর পুজো কমিটি ৷
সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমের যাঁতাকলে হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব। আগামী প্রজন্মে শিশুদের কাছে বই ও খেলাধূলা ইতিহাস হয়ে যাবে। অন্যান্য ব্যাক্তিত্বের মতোই শৈশব স্ট্যাচু হয়ে থাকবে। সেই চিন্তাভাবনাকেই জগদ্ধাত্রীর পুজো মণ্ডপের থিমে ফুটিয়ে ধরেছেন শিল্পী। মানকুণ্ডু নতুনপাড়া সর্বজনীন 49 বছরের পুজোর থিম 'স্মৃতিসত্ত্বা ও ভবিষ্যৎ' ৷ যদিও তাদের থিমের পুজো করলেও প্রতিমা সাবেকিয়ানাতেই ভরসা রেখেছে। এই থিম কবি বিষ্ণুপদ দে-এর একটি বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ 'স্মৃতি সত্তা ও ভবিষ্যৎ' থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি।
শিল্পীর ধারণা, আগামিদিনে সবটাই স্মৃতি হতে চলেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বই খাতা নিয়ে আর স্কুলে যাবে না। অনেকেই এখন অনলাইনের মাধ্যমে পড়াশোনা করছে। ফলে যন্ত্রের কবলে পড়ে মানুষ যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে। যেমন রবীন্দ্রনাথ, বিদ্যাসাগর রাস্তার মোড়ে মোড়ে স্ট্যাচু হয়ে গিয়েছে। তেমনই শৈশব জীবনও স্ট্যাচু হয়ে যাবে। পুজো কমিটির সহ-সম্পাদক সুমন চক্রবর্তী বলেন, "নতুনপাড়া সর্বজনীনের এবারের পুজোর থিমের চিন্তাভাবনা কবি বিষ্ণুপদ দে'র লেখা কাব্যগ্রন্থ থেকে। তবে আমাদের প্রতিমার কোনও পরিবর্তন হয় না। প্রতিমাতে সাবেকিআনায় বিশ্বাসী।"
শিল্পী রঙ্গাজীব রায় বলেন, "100 বছর আগে যেগুলি ঘটে গিয়েছে সেগুলি বর্তমান সময়ে স্ট্যাচু হয়ে গিয়েছে। বর্তমান সময়ে আমরা দেখতে পাব বাচ্চাদের বইপড়া, খেলাধূলা, স্কুলে যাওয়া সবটাই দিন দিন উঠে যাচ্ছে। আমরা এমন এক সভ্যতা তৈরি করছি যেটা শুধুমাত্র ঘিঞ্জি শহর। সেখানে কোনও গাছপালার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। সেটাকেই আমরা তুলে ধরছি। মণ্ডপে ব্যবহার করা হয়েছে বালি ও মাটি যা তৈরি করতে সময় লেগেছে তিন মাস।"
আরও পড়ুন:
- জগদ্ধাত্রী পুজোয় মহানগরে সবজি থেকে ফুল-ফল দাম বাড়ল সবেরই, এক ঝলকে দেখে নিন বাজারদর
- দুর্গার পর চক্রবর্তী পরিবারের জন্য পটের জগদ্ধাত্রী গড়লেন মেদিনীপুরের স্বাস্থ্যকর্মী