সিঙ্গুর, 10 জুলাই : সেদিন সিঙ্গুরে শিল্প করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য । তারপর কেটে গেছে প্রায় 13 বছর । আজ বিধানসভায় বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । ইশু সেই সিঙ্গুর । সিঙ্গুরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আজ তোলপাড় হল বিধানসভা । বিরোধীদের প্রশ্ন ছিল, জমি ফেরতের পর না কি সবরকম সাহায্য করেছিল রাজ্য সরকার । তাহলে চাষের পরিমাণ কমছে কেন ? প্রত্যুত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, চাষিদের তো আর চাষের জন্য জোর করতে পারি না ।
2006 সালে বিধানসভা নির্বাচনে জেতার পর সিঙ্গুরে ন্যানো গাড়ি নির্মাণ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য । শুরু হয়েছিল জমি অধিগ্রহণের কাজ । কিন্তু, শুরু থেকেই অধিগ্রহণ ঘিরে শুরু হয় সমস্যা । অনেকেই জমি দিতে অস্বীকার করেন । অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে তৎকালীন বিরোধীনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে শুরু হয় জমি আন্দোলন । রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে জোর করে জমি অধিগ্রহণের অভিযোগ তুলে ধরনায় বসেন তৃণমূলনেত্রী । ধারাবাহিক আন্দোলনের জেরে সিঙ্গুর থেকে প্রকল্প তুলে গুজরাতে নিয়ে যায় টাটা গোষ্ঠী । প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, 2011 সালে ক্ষমতায় এসে কৃষকদের জমি ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ।
এই সংক্রান্ত খবর : সিঙ্গুরের জমিতে শিল্পও হচ্ছে, চাষও হচ্ছে : মুখ্যমন্ত্রী
2016 সালের 31 অগাস্ট শীর্ষ আদালত 12 সপ্তাহের মধ্যে 1000 একর জমি কৃষকদের ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় । শুরু হয় জমি ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া । সরকারিভাবে দাবি করা হয়েছিল 955 একর জমি চাষযোগ্য করে ফেরত দেওয়া হয়েছে । কিন্তু, বর্তমানে দেখা যাচ্ছে মাত্র 260 একর জমিতে চাষ হচ্ছে । বাকি জমিতে কেন চাষ হচ্ছে না ? এই প্রশ্নেই আজ সরগরম হয়ে উঠে বিধানসভা ।
উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "চলতি বছরে সিঙ্গুরে 260 একর জমিতে চাষ হয়েছে । সরকার কৃষকদের সবরকম সাহায্য করার পরেও চাষের পরিমাণ কেন কমছে আমি কী করে বলব ? কেউ বেশি দাম পেয়ে জমি বিক্রি করে দিচ্ছে । পাশাপাশি, চাষের খরচও বেড়েছে । জোর করে তো আর চাষিদের বলতে পারি না চাষ করো !"
এই সংক্রান্ত খবর : সিঙ্গুর আন্দোলন ভুল ছিল : মুকুল রায়