চন্দননগর , 16 মে : তেলিনীপাড়ার ঘটনা নিয়ে CBI ও NIA তদন্তের দাবি জানালেন হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় ৷ এমনকী , এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র কাছে তাঁরা রিপোর্ট পাঠিয়েছেন ৷ প্রসঙ্গত , কয়েকদিন আগেই ভদ্রেশ্বরের তেলিনীপাড়ার গোষ্ঠী সংঘর্ষ , বোমাবাজি , বাড়িঘর ভাঙচুর , দোকানে আগুন দেওয়া হয় ৷ ফলে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন ও বোমাবাজির ঘটনায় অনেকে আহত হন ৷ ঘটনায় সেইলব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলির পাশে থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি ৷
পাশাপাশি তেলিনিপাড়ার গোষ্ঠী সংঘর্ষে চন্দননগর কমিশনারেটে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় । তিনি বলেন , ‘‘কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ভালো ও প্রিয় থাকার জন্যই শুক্রবার চন্দননগরের বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেনের সঙ্গে CP দেখা করলেন । অথচ হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করছেন না CP । এখানে প্রশাসন পুরোপুরিভাবে তৃণমূলের দলদাস হয়ে গেছে । মুখ্যমন্ত্রীর কিছু নির্দেশ বিধায়ক এসে CP-কে দিয়ে গেছেন । হুমায়ুন কবীর নিজের মতো করে কাজ করবেন । এখানে মানুষের বিচার হয় না ৷ সেই কারণেই লুটপাট ভাঙচুর হয়েছে । 144 ধারা জারি করার পর তেলিনীপাড়ার মতো ছোটো জায়গাতে তিনদিন চারদিন ধরে এভাবে লুটপাট চলতে পারে না । তাহলে তেলিনীপাড়ায় কী করে বাইরে থেকে লোক ঢুকল । কী করে আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা নিয়ে বাইরে থেকে লোক ঢুকেছে । কিন্তু এখনও পর্যন্ত কিছু বলতে পারেননি ।’’
এই ঘটনায় হুমায়ুন কবীরের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি । তিনি বলেন , ‘‘হুমায়ুন কবীর তিনদিন ক্যাম্প করে বসে আছেন । তারপরেও ঘটনাগুলি ঘটছে । সেখানে শ্মশান হয়ে গেছে । তার চেয়েও বড় কথা পুলিশ যাদের গ্রেপ্তার করছে , তাদের মধ্যে বহু নিরীহ মানুষজন আছে । সোশাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো শেয়ার করার জন্য অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৷ তাদের এবিষয়ে জোর করে ভিডিয়ো ডিলিট করানো হয়েছে । সাংসদের শেয়ার করা পোস্ট ডিলিট করিয়ে দেওয়া হয় । এমনকী , হুমায়ুন কবীরের নাম করে একজন মহিলা সুতপা মাইতি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করার জন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । একজন স্কুল টিচার এবং একজন বিকলাঙ্গ মানুষকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । এই ঘটনায় যারা আসল দুষ্কৃতী তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি । তাই নিরীহ মানুষদের আইনি সহায়তার জন্য আমাদের লিগাল সেলের তরফে সাহায্য করা হবে । আমাদের দলের তরফ থেকে আমরা তেলিনীপাড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াব । কারণ ওই এলাকায় ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে আগুন লাগানো হয়েছে । তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব । যারা বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে গিয়ে সেল্টার নিয়েছে , তাদের রেশনের ব্যবস্থা আমরা করব । ’’
এই ধরনের ঘটনা কেন হয়েছে কী জন্য হয়েছে তার কেন্দ্রীয়ভাবে তদন্ত হওয়া উচিত । CBI তদন্ত হওয়ার জন্য আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত সাহের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়েছি ।
প্রসঙ্গত , ভদ্রেশ্বর তেলিনীপাড়ার ঘটনা নিয়ে জেলায় শাসকের দপ্তরে সামনে ধরনায় বসেছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায় ও অর্জুন সিং। তারপর তেলিনীপাড়ায় যাওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা । তাঁদের রাস্তায় আটকে দেওয়া হয় । এরপর লকেট চট্টোপাধ্যায় ফেসবুকে কিছু উসকানিমূলক পোস্ট করেন । এই সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে আজ তাঁর ও অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে চন্দননগর পুলিশের তরফে । এরপরই লকেট চট্টোপাধ্যায় তেলিনীপাড়া নিয়ে CBI ও NIA তদন্তের দাবি জানায় ৷