কলকাতা, 19 অক্টোবর: উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে ফের বিতর্কিত মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ যে সিঙ্গুর আন্দোলনকে হাতিয়ার করে তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ারে সবচেয়ে বড় উত্থান সেই আন্দোলন নিয়ে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'সিঙ্গুর থেকে টাটাদের সিপিএম তাড়িয়েছে।' মমতার এই মন্তব্যের পরই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি ৷ উত্তরবঙ্গ সফর থেকে অতীত উসকে দেওয়ায় নানা বিতর্ক সামনে উঠে আসছে (Controversies arise on Mamata Banerjee Singur remarks)। তৎকালীন সময়ে সিঙ্গুরের টাটা ন্যানো কারখানা তৈরির জন্য সিপিএম একযোগে মাঠে নামে। প্রতিবাদে নামে সিঙ্গুরের খাসেভেরি, বাজেমেলিয়া-সহ একাধিক গ্রামের মানুষ।
জমি অধিগ্রহণ থেকে সিঙ্গুরের টাটার প্রজেক্টে পাঁচিল দেওয়া নিয়ে প্রতিরোধের আগুন জ্বলে। সেই আগুনে ঘৃতাহুতি দেয় রাজকুমার ভুল ও তাপসী মালিক। কিন্তু ধর্ষণ করে আগুনে পুড়িয়ে মারার অভিযোগের বিচার এখনও অসমাপ্ত। এখনও বিচার পায়নি তাপসী মালিকের পরিবার। কিন্তু সেই অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন সুহৃদ দত্ত। যে ন্যানো কারখানার অর্ধেকের বেশি কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল, সেই কারখানা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনও অধিকাংশ জমি চাষযোগ্য করা যায়নি। ভেরি তৈরি করা হয়েছে। টাটাদের ন্যানো শিল্পকে কেন্দ্র করে যে সিঙ্গুরে কর্মসংস্থানের হাট হত, তা এখন শ্মশান বলে অভিযোগ বিরোধীদের। না হয়েছে শিল্প না হয়েছে কৃষি। বেকার যুবকদের কোনও কর্মসংস্থান হয়নি।
তৎকালীন সিঙ্গুরের নেতা তথা সিপিএমের হুগলি জেলার সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যা কথা বলছেন। মিথ্যা বলাটাই তার শিষ্টাচার। বেকার ছাত্র যুবরা আন্দোলন গড়ে তুলছে প্রতিদিন। পায়ের তলার মাটি গরম হয়ে যাচ্ছে। একটা কিছু বলে চর্চায় থাকবেন তিনি। মানুষ তার অভিজ্ঞতায় বুঝেছে গোটা এগারো বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেবল রাজ্য নয়, দেশের ক্ষতি করছেন। একটা সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ডেকে এনে এর মাশুল ওনাকে দিতে হবে। গোটা দেশকে উচ্ছন্নে নিয়ে যাওয়ার জন্য দিল্লিতে মোদি যা করছে, সহায়ক শক্তি হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে একই কাজ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷"