পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

TMC Leader Murder Case তৃণমূলের প্রাক্তন উপপ্রধান খুনে যাবজ্জীবন সাজা দলেরই প্রাক্তন প্রধানের - ধনিয়াখালির তৃণমূল নেতার যাবজ্জীবন সাজা

ধনিয়াখালির গোপিনাথপুর 2 পঞ্চায়েতের দখলকে কেন্দ্র করে 2018 সালের মে মাসে খুন হন পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান মৃত্যুঞ্জয় বেরা (Dhaniakhali TMC Leader murder case) ৷ তাঁকে খুনে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ওই পঞ্চায়েতেরই প্রাক্তন প্রধান সহ 8 জন ৷ তাদের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে (lifetime imprisonment for ex TMC Panchayat Pradhan in murder case at Dhaniakhali) ৷

TMC Leader Murder Case
ETV Bharat

By

Published : Aug 26, 2022, 9:23 PM IST

চুঁচুড়া, 26 অগস্ট: তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে প্রাক্তন উপপ্রধান খুন ৷ আর এই ঘটনায় শুক্রবার যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা হল তৃণমূলেরই প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান-সহ 8 জনের বিরুদ্ধে । সাজা ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই এদিন আদালতের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতের পরিবারের সদস্য ও অনুগামীরা ৷ পালটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেছে পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল প্রধানের পরিবারের (Dhaniakhali TMC Leader murder case) ।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, 2013 সাল থেকে 2018 সাল পর্যন্ত ধনিয়াখালির গোপিনাথপুর-2 পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন মৃত্যুঞ্জয় বেরা । চিত্তরঞ্জন সাঁতরা ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন 2008 থেকে 2013 সাল পর্যন্ত । 2018 সালের মে মাসে পঞ্চায়েতের ফল ঘোষণা হয় । সেবার গ্রামসভা ও পঞ্চায়েত সমিতিতে বিরোধীরা মনোনয়ন জমা করতে না পারায় জয়ী হয়েছিল তৃণমূল । এরপর পঞ্চায়েত কার দখলে থাকবে তা নিয়ে তৃণমূলের দুই নেতা চিত্তরঞ্জন সাঁতরা ও মৃত্যুঞ্জয় বেরার মধ্যে গন্ডগোল শুরু হয় (Dhaniakhali TMC inner clash) ।

আরও পড়ুন: মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে মমতার সুরেই সুর মেলালেন ফিরহাদ

তা মেনে না নেওয়ায় 2018 সালের 23 মে ধনিয়াখালির বিডিও পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের জন্য সভা ডাকেন । সেই সভা থেকে বাইক নিয়ে ফেরার পথে দুপুর তিনটে নাগাদ কুমরুল আলুপট্টিতে আক্রান্ত হন মৃত্যুঞ্জয় বেরা । রড, শাবল, ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয় তাঁকে । গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতাল ও পরে সেখান থেকে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয় । 25 মে মৃত্যু হয় তাঁর ।

নিয়াখালিতে তৃণমূলের প্রাক্তন উপপ্রধান খুনে যাবজ্জীবন সাজা দলেরই প্রাক্তন প্রধানের

উপপ্রধানের মৃত্যুতে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এলাকা । হয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ৷ তখনই অভিযোগ ওঠে উপপ্রধানকে পিটিয়ে খুন করেছে তৎকালীন প্রধান চিত্তরঞ্জন সাঁতরা ও তার দলবল । এই ঘটনায় উপপ্রধানের স্ত্রী শিপ্রা বেরা 13 জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন ধনিয়াখালি থানায় । ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিল অভিযুক্তরা । পুলিশ তদন্তে নেমে মূল অভিযুক্ত চিত্তরঞ্জন সাঁতরাকে নদি য়া থেকে গ্রেফতার করে । অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার হয় সুরজিৎ সাঁতরা, বিশ্বজিৎ সাঁতরা ও বিশ্বজিৎ ঘোষ নামে আরও তিনজনকে । হাওড়ার উলুবেড়িয়া থেকে গ্রেফতার করা হয় অরূপ সিং, বিদ্যুৎ রায়, দীপু বাউড়ি, কাজী মহম্মদ বাদশাকে । তবে পাঁচজন অভিযুক্ত এখনও পলাতক রয়েছে ।

আরও পড়ুন: সিপিআইএমের শিলিগুড়ি পৌরনিগম ঘেরাও অভিযান, পুলিশের সঙ্গে ধুন্ধুমার

মামলার সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় জানান, অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশ দ্রুত গ্রেফতার করে অভিযুক্তদের । ছ'জন জামিন পায় হাইকোর্ট থেকে, দু'জন জেল হেফাজতে ছিল । চুঁচুড়া আদালতে অভিযুক্তদের বিচার পর্ব শুরু হয় । 25 জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয় । বুধবার বিচারক অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করেন । শুক্রবার তাদের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করেন (lifetime imprisonment for ex TMC Panchayat Pradhan in murder case at Dhaniakhali) ।

এদিন সাজা ঘোষণার পর দোষীদের প্রিজনভ্যানে তোলার সময় আদালত চত্বরেই বিক্ষোভ শুরু করেন মৃত্যুঞ্জয় বেরার অনুগামীরা । দোষীদের ফাঁসির দাবি তোলেন তাঁরা ৷ তবে দোষী সাব্যস্ত হওয়া প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান চিত্তরঞ্জন সাঁতরার বোন অভিযোগ করেন, তাঁর দাদা ও ভাইপোদের ফাঁসানো হয়েছে । এই প্রসঙ্গে আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও বিধায়ক রামেন্দু সিংহরায় বলেন, "এই নৃশংস খুনের ঘটনায় বাকি পাঁচজনকে গ্রেফতার করুক পুলিশ । পরিবারের প্রতিসমবেদনা জানাচ্ছি । মৃত্যঞ্জয়ের পরিবারের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব । এটা তৃণমূলের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয় ।"

For All Latest Updates

ABOUT THE AUTHOR

...view details