চুঁচুড়া, 20 মার্চ: শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়-ঘনিষ্ঠ অয়ন শীলকে (Ayan Sil) গ্রেফতার করেছে ইডি (ED) । অয়নের বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ রয়েছে । সেই সূত্র ধরেই নতুন করে তদন্ত শুরু করতে চলেছে ইডির আধিকারিকরা । তদন্তকারীরা মনে করছেন, অয়নের সূত্র ধরেই একাধিক পৌরসভা ও দমকল বিভাগে নিয়োগ নিয়ে উঠে আসতে পারে নয়া তথ্য । তবে অয়নের ব্যাপারে খোঁজ খবর করতে সূত্র মারফত সংবাদমাধ্যমের সামনে উঠে এসেছে বেশ কিছু তথ্য ৷
অয়ন শীলের কর্মজীবনের সূত্রপাত: প্রথম জীবনে ভোটার কার্ড প্রাপকদের ডাটা এন্ট্রির কাজ করতেন অয়ন । তবে সেই কাজ সরকারি ছিল না । সেটি ছিল কন্ট্রাক্টচুয়াল কাজ । চুঁচুড়ায় মাইক্রোটেক নামে একটি কম্পিউটারের দোকান ছিল তাঁর । সরকারি বিভিন্ন জায়গায় কম্পিউটার সাপ্লাই দিতেন তিনি । বেশ কিছু লোক তার জন্য কাজ করতেন । তাদের মধ্যেই পূর্ণেন্দু চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তির নাম উঠে আসে । এই ঘটনা 2005 সালের । কিন্তু তারপর থেকে ছেলে মেয়েদের চাকরি করে দেওয়ার নামে টাকা তোলা শুরু হয় । 2015 সালে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলে বেপাত্তা হয়ে যায় অয়ন । একাধিক অভিযোগ থাকায় পূর্ণেন্দু সরে আসার চেষ্টা করলে তাঁকে মারধর করা হয় । চুঁচুড়া থানায় তিনি মামলা করেন অয়নের বিরুদ্ধে ।
তৃণমূল নেতার সঙ্গে অয়নের যোগ: শুধু এখানেই শেষ নয়, চাকরি দেওয়ার নাম করে বাম আমলে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায় ওরফে গুরু দা'র হাত ধরেই অয়নের উত্থান । তবে রাজনীতির সঙ্গে তেমন যোগ ছিল না তার । গুরুদার প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে পঞ্চায়েত দফতরের একটা চাকরিও জুটিয়েছিলেন তিনি । পরে সেই চাকরি ছেড়ে দেন । শ্রীকুমারকে সামনে রেখে টাকা তুলতেন অয়ন বলে অভিযোগ । বহু মানুষকে প্রতারিত করার অভিযোগ অয়নের বিরুদ্ধে । পাওনাদাররা টাকা ফেরতের চাপ দিলে তিনি বলতেন টাকা নিয়েছেন গুরুদা । সেই যন্ত্রণার হাত থেকে বাঁচতে শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায় আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি এলাকাবাসীর ৷ তারপরও অয়ন সকলকে বলতোন সব টাকা গুরুদাই নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে ।
চাকরি বিক্রির টাকায় আবাসন তৈরি:সরকার পরিবর্তনের পর রাজনৈতিক ঠেক খুঁজছিল এই অভিযুক্ত । পরে চাকরি বিক্রির টাকায় চুঁচুড়ার জগুদাস পাড়ায় আবাসন এবিএস টাওয়ার বানায় অয়ন । পরবর্তীকালে শান্তনুর সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাঁর । সেই সময় শান্তনুর জেলায় রাজনীতির চূড়ায় পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি । সেই সূত্র ধরেই প্রোমোটিং ব্যবসা শুরু করে অয়ন । জানা গিয়েছে, শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর চাকরির জন্য যারা টাকা দিয়েছিল তারা ফ্ল্যাটে গিয়ে ঝামেলা করতে শুরু করে ৷ থানায় অভিযোগও হয় ৷ ভয়ে অয়ন পালিয়ে দিল্লি চলে যান । সেখান থেকেই নেতাদের ধরে মামলায় চাপ সৃষ্টি করেন তিনি । শান্তনুর প্রভাব খাটিয়ে পাওনাদারদের পুলিশের ভয় দেখিয়ে অভিযোগ থেকে বেরিয়ে আসেন । আবার এলাকায় যাতায়াত শুরু করে অয়ন ।