চুঁচুড়া, 27 অগস্ট:গতিধারা প্রকল্পের নামে সেয় ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি খুলে প্রতারণার অভিযোগ তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে (Lakhs of fraud in name of getting cars for Gatidhara project) । ভদ্রেশ্বর, জগদ্দল ও চুঁচুড়া থানা এলাকা থেকে ক্যাম্প লাগিয়ে টাকা তোলা হয়েছে । গতিধারা প্রকল্পের গাড়ি পাইয়ে দেওয়ার জন্য 40 জনের বেশি মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হয় । লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণা স্বীকার হয়েছে মানুষ ।
2019 সালে ফেব্রুয়ারি থেকে বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প খুলে প্রতারণার প্রক্রিয়া শুরু হয় । বহু বেকার যুবক কিছু না বুঝতে পেরে এই প্রতারণার ফাঁদে পা দেয় । প্রথম দিকে গতিধারার একটি গাড়ি দেওয়া হয়েছিল । পরে অবশ্য নম্বর করে ফেরত নেওয়া হয় গাড়ি । একটি গাড়ি ব্যবহার একাধিক মানুষকে ফাঁদে ফেলা হয় । এর মূল অভিযুক্ত মহম্মদ সাকিব ও তাঁর বাবা ও ভাই ।
তবে মঙ্গলবার কলকাতা থেকে সাকিবের ভাই সাইফকে গ্রেফতার করে ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশ । বুধবার চন্দননগর কোর্টে তোলা হলে তিনদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত । শনিবার আবারও তাকে আদালতে তোলা হলে আরও দু'দিনের পুলিশ হেফাজতে নির্দেশ দেয় আদালত । তবে সাকিব ও তার বাবার মহম্মদ সাবিরের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ ।
ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে সাকিবের ছবি দেখিয়ে প্রতারণা করা হয় পুলিশ সূত্রে খবর, চাঁপদানির ব্যবসায়ী মহম্মদ মমতাজ আনসারিকে গতিধারা প্রকল্পের গাড়ি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় মহম্মদ সাকিব । এরপর কলকাতার অফিসে মমতাজকে ডেকে পাঠায় সাকিব । সেখানে বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে তার ছবি দেখানে হয় ৷ বলা হয় তাদের সঙ্গে সাকিবের পরিচয় রয়েছে । এমনকি পৌরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের (Minister Firhad Hakim) ছবি দেখিয়ে আশ্বস্ত করে প্রতারকরা । তাই তাড়াতাড়ি গতিধারা প্রকল্পের গাড়ি সাকিব পাইয়ে দিতে পারবেন (Fraud Case) ।
মমতাজের কাছ থেকে এরপর বিভিন্ন কিস্তিতে মোট 3 লক্ষ 73 হাজার 100 টাকা নেয় অভিযুক্তরা । এরপর প্রায় দুই বছর কেটে গেলেও গাড়ি হাতে পাননি মমতাজ । তিনি গাড়ির প্রসঙ্গ তুলতেই তা এড়িয়ে যেতে শুরু করেন অভিযুক্তরা । মমতাজ বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন । এ বছর এপ্রিল মাসে চন্দননগর কোর্টে ও ভদ্রেশ্বর থানায় মহম্মদ সাইফ, মহম্মদ সাকিব ও মহম্মদ সাবির নামে অভিযোগ জানান মমতাজ আনসারি ।
সরকারি প্রকল্প গতিধারায় গাড়ি পাইয়ে দেওয়ার নামে লক্ষাধিক টাকার প্রতারণা আরও পড়ুন:ভুল বোঝাবুঝি, শিশু চোর সন্দেহে আটক ব্যক্তিকে ছেড়ে দিল পুলিশ
এর আগেও চন্দননগর কোর্টে সাকিবের নামে প্রতারণার মামলা রয়েছে । মমতাজের আইনজীবী দিগন্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, শুধু মমতাজের সঙ্গেই নয়, চাঁপদানি, ভদ্রেশ্বর এলাকার অনেকের সঙ্গেই এরকম প্রতারণা করা হয়েছে । গরিব মানুষকে সাবসিডিতে গাড়ি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রতারণা চালিয়ে গিয়েছে এই তিন জন । অভিযুক্তরা সম্পর্কে বাবা ও দুই ছেলে । সেয় ট্রান্সপোর্টেশন অ্য়ান্ড লজিস্টিক প্রাইভেট লিমিটেড নামক একটি বেসরকারি কোম্পানি খুলে তার ব্যানারে প্রতারণা চালাত অভিযুক্তরা । ছোটো ছেলে সাইফকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । বাকি দুই অভিযুক্ত বড় ছেলে মহম্মদ সাকিব ও বাবা সাবির আলির খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশ ।