কোন্নগর, 9 অগাস্ট : কোঝিকোড়ে বিমান দুঘর্টনা ৷ রানওয়েতে দু'টুকরো হয়ে পড়ে আছে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের বোয়িং 737 বিমানটি ৷ ভেসে আসছে চিৎকার, স্বজন হারানোর কান্না, অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন ৷ ছুটোছুটি করছে পুলিশ, হাসপাতালের কর্মী ৷ বাড়ছে মৃতের সংখ্যা ৷ রক্তাক্ত যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতাল ৷ টিভির খবরে এসব দেখছিলেন অজয় ও ভারতী বিশ্বাস ৷ দুরু দুরু বুকে ওই ছোট্ট স্ক্রিনে এত ভিড়েও খুঁজছিলেন নিজের ছেলেকে ৷ যদি একবার দেখা যায়, এই আশায় ৷
হাতের কাছেই ফোনটি রেখেছিলেন অজয়বাবু ৷ বারবার দেখছিলেন মোবাইলের স্ক্রিনে ৷ এভাবেই কেটে যাচ্ছিল সেকেন্ড, মিনিট, ঘণ্টা ৷ প্রায় দুঘণ্টা পর বেজে উঠল মোবাইল ফোনটা ৷ স্ক্রিনে দেখলেন ছেলের নাম ৷ রিসিভ করার পর ওপারের কণ্ঠ ''চিন্তা কোরো না ৷ আমি ভালো আছি ৷'' এবারে যেন প্রাণ ফিরে পেলেন ওই দম্পতি ৷ ভগবানকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রণাম করলেন ভারতীদেবী ৷ আজ তিনি বললেন, ''যেন একটা ঝড় গেল ৷ খুব চিন্তায় ছিলাম ৷ আমার ছেলে অভীক তো ওই বিমানেই কেবিন ক্রু'র দায়িত্বে ছিল ৷ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বুকটা ধড়াস করে উঠেছিল ৷ ও ঠিক আছে তো ? কিছু হয়নি তো ওর ? এমন সব আশঙ্কায় বুকটা কাঁপছিল ৷ মায়ের মন তো ৷ ফোনটা আসার পর নিশ্চিন্ত হই ৷ ''
হুগলির কোন্নগরের অভীক বিশ্বাস ৷ শুক্রবার সন্ধ্যায় দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটিতে থাকা একমাত্র বাঙালি ৷ যিনি এখন বিপদ থেকে মুক্ত ৷
ছোটোবেলা থেকেই অভীকের স্বপ্ন পাইলট হওয়ার । সেই স্বপ্ন নিয়েই এই পেশায় আসা ৷ বছর তিনেক আগে এক বেসরকারি বিমান সংস্থায় কেবিন ক্রু হিসেবে কাজে যোগ দেন । মাসখানেক আগে কোন্নগরের বাড়িতে এসেছিলেন ৷ বাড়ি থেকে ফিরেই কোঝিকোড়ে এয়ার ইন্ডিয়াতে কাজে যোগ । একমাস ধরে বন্দে ভারত মিশনে কাজ করছেন । দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নেওয়া অভীকের লক্ষ্য পাইলট হওয়ার ৷ কিন্তু, অর্থাভাবে তা হয়ে ওঠেনি ৷ আপাতত কেবিন ক্রু হিসেবে তিনি কর্মরত ৷