হুগলি, 3 ডিসেম্বর: উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কাটিয়ে অবশেষে ঘরের ছেলে ফিরল ঘরে ৷ উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা টানেল থেকে উদ্ধার হওয়ার পর রবিবার সকালে হাওড়া-আরামবাগ লোকালে তোকিপুর স্টেশনে পৌঁছয় জয়দেব প্রামাণিক ও সৌভিক পাখিরা ৷ পুরশুড়ার হরিণখালি ও নিমডাঙিতে উচ্ছাস ও আনন্দে মেতে ওঠেন সকলে। বুকে জড়িয়ে ধরেন মা ৷ চলে মিষ্টিমুখও ৷
জয়দেব-সৌভিক গ্রামে ঢুকতেই তাঁদের মালা পরিয়ে, শঙ্খধ্বনি দিয়ে স্বাগত জানান বন্ধু-বান্ধব থেকে আত্মীয়স্বজন ৷ ট্রেন থেকে নেমে সৌভিক বলেন, "বাড়িতে ফিরে ভালো লাগছে। সবাই এতদিন আশা করেছিল কবে ফিরব। সবার সঙ্গে দেখা হবে।"
একইসঙ্গে সিল্কিয়ারা টানেলে আটকে পড়ার ভয়ঙ্কর দিনগুলোর কথা মনে করে সৌভিক বলেন, "আমরা কাজ করছিলাম ৷ সেই সময় ধস নেমে সুড়ঙ্গের দুই মুখ আটকে যায়। প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম ৷ বাইরে থাকা সকলের সঙ্গে কথা বলার পর মনে শক্তি সঞ্চার হয় ৷ তারপর থেকে ভিতরে কোনও অসুবিধা হয়নি। মা-বাবার কথা মনে পড়ছিল। পরে পরিবারের সঙ্গে কথা হয়। সবাই একসঙ্গে ছিলাম বলে চিন্তা ছিল না। বাড়ি ফিরেছি পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে। আবার কাজে যোগ দেব। দুর্ঘটনার সময় কোম্পানি সাহায্য করেছে, তাই আবার যাব।"
জয়দেবও খুশি বাড়ি ফিরে। তিনি সংবাদমাধ্যমে জানান, আমার শরীর ভালোই আছে । টানেলে আটকে পড়ার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে জয়দেব বলেন, "আমাদের কাজ করার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। সুড়ঙ্গের মধ্যে খাওয়া-দাওয়ার কোনও অসুবিধা হয়নি। ভয় কাটাতে তাস খেলে হাসি-মজা করে সকলেই কাটিয়েছি। আমরা স্পেশাল ট্রেনে ফিরেছি। কোম্পানি সব কিছুর খরচ দিয়েছে। কাজ ছাড়ব না ৷"
জয়দেব ও সৌভিক বাড়ি ফিরতেই বুকে জড়িয়ে ধরেন তাঁদের বাবা-মা। সৌভিকের মা লক্ষী পাখিরা ধান-দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করেন ছেলেকে। তারকেশ্বর মন্দিরের প্রসাদ খাইয়ে দেন তিনি। ছেলে ফেরায় খুশি মা। তিনি বলেন, "ভালোই লাগছে ৷ আনন্দ লাগছে জয়ী হয়ে ফিরেছে সৌভিক। সুড়ঙ্গে 17 দিন থাকার পর ছেলেকে ফিরে পাব কল্পনা করতে পারিনি। মা হয়ে আমি যথেষ্টই গর্বিত।" ফের কাজে পাঠাবার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, "কাজে তো পাঠাতে হবে। কিন্তু চিন্তাও থাকবে ৷" সৌভিক বাড়ি ফিরতেই মা-কাকিমা তাঁর পছন্দের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন বলে জানা গিয়েছে ৷