পান্ডুয়া, 19 জুলাই : হাসপাতালে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঝাড়ফুঁক করে বাঁচিয়ে তোলার চেষ্টাও বৃথা হল ৷ সাপের কামড়ে পান্ডুয়ায় মৃত্যু হল এক বালিকার ৷ নাম বৃষ্টি সরেন (9) ।
চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী বৃষ্টির বাড়ি খন্যানের মুলটি গ্রামে । গত বুধবার বাড়ির পাশেই তাকে সাপে কামড়ায় । এরপর চিকিৎসার জন্য খন্যান প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় বৃষ্টিকে । সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ৷ দু'দিন সেখানে ভর্তি থাকার পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় বন্ডে সই করিয়ে বৃষ্টিকে বাড়ি নিয়ে চলে আসে তার পরিবার ।
বাড়ি আসার পথে জিরাটের এক কবিরাজের থেকে ওষুধ নিয়ে এসে খাওয়ানো হয় বৃষ্টিকে । শুক্রবার ফের তার অবস্থার অবনতি হলে কালনা বেলতলায় ওঝার কাছে ঝাড়ফুঁক করে বাড়ি নিয়ে আসার পর শনিবার রাতে তার মৃত্যু হয় । এরপর খন্যান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা বৃষ্টিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷
হাসপাতাল থেকে বন্ডে ছাড়িয়ে ঝাড়ফুঁক, সাপের কামড়ে মৃত বালিকা মৃতদেহ বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে এসে স্যালাইন দেওয়া হয় ৷ মৃতদেহ বাড়িতে রেখে ওঝার থেকে ওষুধ নিয়ে এসে যথারীতি চলতে থাকে তুকতাক ৷ রবিবার বর্ধমানের রসুলপুরে এক ওঝার সঙ্গে যোগাযোগ করে সেখান থেকেও ওষুধ নিয়ে আসা হয় ।
আরও পড়ুন :River Pollution : অবিরত পড়ছে কারখানার বর্জ্য, হুগলিতে দূষণে মুহ্য ঘিয়া
এইসব চলাকালীন স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পান্ডুয়া থানার পুলিশ ৷ বাড়ি গিয়ে বৃষ্টির মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয় । দেখা যায় ইতিমধ্যেই দেহে পচন ধরতে শুরু করেছে ।
এই বিষয়ে মৃত ছাত্রীর বাবা রাজু সরেন জানান, আদিবাসীদের অনেক সংস্কার আছে । যা অন্যদের সঙ্গে মেলে না । তাই সব রকম চেষ্টা করা হয়েছে ।
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্য সন্দীপ সিংহ জানান, সাপে কাটা রোগীকে বাঁচাতে ঝাড়ফুঁকের বদলে চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর ভরসা রাখতে হবে । বিংশ শতাব্দীতে মানুষকে এখনও ঝাড়ফুঁক তুকতাক করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে । তাই আমরা চেষ্টা করব যাতে মানুষকে আরও বেশি করে সচেতন করা যায় ।