উত্তরকাশীর সিল্কইয়ারা টানেলে আটকে রয়েছেন হুগলির সৌভিক পাখিরা ও জয়দেব প্রামানিক আরামবাগ, 22 নভেম্বর: আটকে থাকা শ্রমিকরা সুস্থ রয়েছেন ৷ মঙ্গলবার এই খবর শুনে স্বস্তির পেয়েছে ওই শ্রমিকদের পরিবার ৷ তাও পরিবারের সদস্যরা চায়, ঘরের মানুষ যত দ্রুত সম্ভব বাড়িতে ফিরে আসুক ৷ ওই টানেলে আটকে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের হুগলির পুরশুড়া ব্লকের দু'জন রয়েছেন- জয়দেব, সৌভিক ৷
মঙ্গলবার উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারায় নির্মীয়মান টানেলে 6 ইঞ্চির পাইপ প্রবেশ করানো হয়েছে ৷ পাইপের মধ্যে দিয়ে ক্যামেরা ঢুকিয়ে কথা বলার ব্যবস্থাও করেছে প্রশাসন ৷ গতকাল এবং আজও খাবার পাঠানো হয়েছে ৷ সেখান থেকে ভিডিয়ো বার্তায় জয়দেব প্রামাণিক জানিয়েছেন, তিনি ঠিক আছেন ৷ তাঁর মা যেন দুশ্চিন্তা না করেন ৷ এরপর কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে জয়দেবের পরিবার।
জয়দেব ছাড়াও পুরশুড়ার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা সৌভিক পাখিরা ৷ তিনি কলকাতার আশুতোষ কলেজ থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেছেন ৷ 10 মাস আগে একটি বেসরকারি কোম্পানির চাকরিতে যোগ দেয় উত্তরাখণ্ডে । পুজোর ছুটিতে তিনি বাড়িতে আসেন ৷ পরে উত্তরকাশীতে ফিরে গিয়ে কাজে যোগ দেন ৷ তবে সৌভিকের কাছে খাবার ও অক্সিজেন পৌঁছলেও দুশ্চিন্তায় তাঁর পরিবার ৷ টানেলে আটকে থাকা আরেক শ্রমিক জয়দেব প্রামাণিকের বাড়ি পুরশুড়ার নিমডাঙ্গিতে ৷ তিনি ওই প্রজেক্টের সার্ভে ডিপার্টমেন্টে কাজ করছিলেন ৷
আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার ও পুড়শুরার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ শ্রমিকদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ৷ মঙ্গলবার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ সৌভিক ও জয়দেবের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন ৷ তাঁরাও দু'জনের পরিবারকে তাঁদের ফিরে আসা নিয়ে আশ্বস্ত করেছেন ৷
সৌভিকের মা লক্ষ্মী পাখিরা বলেন, "গত শনিবার রাতে কথা হয়েছিল ৷ তারপর থেকে সৌভিকের সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ করা যায়নি ৷" জয়দের বাবা তাপস প্রামানিক বলেন, "দশ দিন যাবৎ ছেলের গলা শুনিনি ৷ মঙ্গলবার সকাল 11 টায় কথা বলেছে ৷ ও ভালো আছে, এটা শুনেছি । কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছি আমরা ৷ সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওদের আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিক ৷ সবাই বাড়ি ফিরে আসুক ৷"
ওই একই প্রজেক্টে কাজ করেন অনিমেষ মাইতি ৷ তিনি সৌভিকের গ্রামে থাকেন ৷ অনিমেষ ছুটিতে বাড়ি এসে বলেন, "ওদের সঙ্গেই কিছুটা দূরত্বে আমি কাজ করেছি ৷ ধসের পর প্রথম 12 ঘণ্টা কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷" সিল্কিয়ারা টানেল নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, শীতে বরফ পড়ে ওই এলাকায় রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় ৷ তাই যাতায়াতের সুবিধের জন্যে এই টানেল তৈরি করা হচ্ছিল ৷ রাস্তার নীচ দিয়ে সাড়ে চার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হচ্ছে ৷ এতে শীতকাল এবং যে কোনও সময় যাতায়াত করা যাবে ৷ অনিমেষ বলেন, "আমাদের কোম্পানি টানেলের আড়াই কিলোমিটার কাজের বরাত পেয়েছে ৷ টানেলের মাঝে পাঁচশো মিটার কাজ বাকি ছিল ৷ সেটা করতে গিয়েই এই বিপত্তি ৷ এই গ্রাম থেকে ওই প্রজেক্টে 5-7 জন কাজ করছেন ৷"
আরও পড়ুন:
- 'মা ভালো আছি, চিন্তা করো না', আশ্বস্ত করলেন সিল্কিয়ারার টানেলে আটকে পড়া বাংলার শ্রমিক
- প্রকাশ্যে সিল্কিয়ারা টানেলে আটকে থাকা 41 জন শ্রমিকের ছবি-ভিডিয়ো
- সিল্কিয়ারা টানেলে 10 দিন! সোমবার রাতে গরম খিচুড়ি-ডাল পেলেন আটকে থাকা শ্রমিকরা