পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

পুলিশ তৎপর হলে দুর্ঘটনা এড়ানো যেত, বলছেন চুঁচুড়ার বাসিন্দারা - নৈহাটি

নৈহাটিতে বাজি নিষ্ক্রিয়র সময় ঘটা বিস্ফোরণের পর কাছাকাছি এলাকাগুলিতে ক্ষয়ক্ষতি ছিল চোখে পড়ার মতো ৷ কোথাও ভেঙেছে বাড়ির দেওয়াল ৷ কোথাও কাচ ৷ আহত অনেকে ৷ পুলিশ তৎপর হলে এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত বলে মনে করছেন চুঁচুড়ার বাসিন্দারা ৷

নৈহাটি বিস্ফোরণ
নৈহাটি বিস্ফোরণ

By

Published : Jan 10, 2020, 11:58 PM IST

চুঁচুড়া, 10 জানুয়ারি : খাটে শুয়ে দুই খুদে । নিজের মনে খেলছে দেখে পাশের ঘরে নিশ্চিন্তে দুপুরের খাবার সারছিলেন বদরুল হাসান ও তাঁর বিবি । পাশের ফ্ল্যাটে রোদ পোহাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি । হঠাৎ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে সব । কিছু বুঝে ওঠার আগেই পায়ে ভেঙে পড়ে কাচের দরজা । শিশু দু'টিও তারস্বরে চিৎকার শুরু করে । রীতিমতো ভয় পেয়ে কী করবেন বুঝে ওঠার আগেই আর এক ফ্ল্যাট থেকে চিৎকার । সেখানেও একই অবস্থা । ভেঙে পড়েছে জানলার কাচ । একটুর জন্য বেঁচে গেছেন অদিতি মিত্র । গতকাল নৈহাটিতে বাজি নিষ্ক্রিয়র সময় ঘটা বিস্ফোরণের পর কাছাকাছি এলাকাগুলিতে দৃশ্যটা ছিল এরকমই ৷ পুলিশ তৎপর হলে দুর্ঘটনা এড়ানো যেত বলে মনে করছেন চুঁচুড়ার বাসিন্দারা ৷

3 জানুয়ারি নৈহাটির দেবক গ্রামে একটি অবৈধ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পর মৃত্যু হয় চার জনের । সেই কারখানায় বাজির পাশাপাশি লুকিয়ে বোমা তৈরি হত বলে দাবি করে এলাকাবাসী । তারপরই উত্তর 24 পরগনার বেশ কিছু এলাকা থেকে নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করে তা নিষ্ক্রিয় করার কাজ শুরু করে পুলিশ । গঙ্গাপারে সেই কাজ 5 জানুয়ারি থেকে চলছে । ফলে বাজি ফাটার আওয়াজে বা ছোটোখাটো বোমা ফাটার আওয়াজে খুব একটা বিষ্মিত হন না তাঁরা । কিন্তু গতকাল দুপুরে যে আওয়াজ হয়, যে পরিমাণ কম্পন হয় তা এখনও ভুলতে পারছেন না চুঁচুড়ার লোকজন ।

বাড়ির দরজার কাচ ভেঙে পায়ে পড়ে যাওয়ায় আপাতত হাসপাতালে বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর স্ত্রী জয়া বন্দ্যাপাধ্যায় জানান, "আমরা বুঝতেই পারিনি এতটা বড় আকার নেবে এটা । আমার স্বামীর পায়ে 9টা সেলাই পড়েছে । পুলিশ যে গঙ্গাপারে এমন কাজ করবে তা আগে থেকে আমাদের জানানো হয়নি ৷ তাহলে আমরা সতর্ক থাকতাম । আচমকা এমন হওয়ায় আমি বুঝতে পারছিলাম না কী করব । ওঁর (বিশ্বনাথ ব্যানার্জি) পা থেকে এত রক্ত বেরচ্ছিল আটকানোই যাচ্ছিল না ।"

পুলিশ তৎপর হলে দুর্ঘটনা এড়ানো যেত বলে মনে করছেন চুঁচুড়ার বাসিন্দারা

বিস্ফোরণের শব্দে কিছুক্ষণ কানে শুনতে পারছিলেন না চুঁচুড়ার বাসিন্দা বদরুল হাসান ৷ বলেন, "খেতে বসে এমন আওয়াজ হল কিছুক্ষণের জন্য কানে কিছু শুনতে পারছিলাম না । আমরা তো তাও অনুভব করতে পারি, বহিঃপ্রকাশ করতে পারি । কিন্তু, আমার ঘরে দু'টো বাচ্চা, কয়েকমাস বয়স । ওদের কী হয়েছে বলুন তাহলে । ওরা তো বলতেও পারছে না । যদি, আমার বাড়িতে কাচ ভেঙে পড়ত বা অন্য কিছু কম্পনে খুলে পড়ত তাহলে কী হত, ক্ষতি হলে সেই ক্ষতিপূরণ কে দিত ।"

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই বাকিরাও একে একে অভিযোগ জানাতে শুরু করেন । সকলের একটাই কথা, আগে থেকে কেউ জানাল না কেন । তাদের মধ্যেই একজন আবার অভিযোগ তোলেন, সামান্য বাজিতে এই ধরনের বিস্ফোরণ হয় না । নিশ্চয়ই ওখানে অন্যকিছু ছিল ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details