হুগলি, 4 জুন : অক্সিজেন নয়, সিলিন্ডারের অভাবের কারণেই কালোবাজারি চলছে । সরকারি তরফে ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিলেন্ডারকে মেডিকেল সিলিন্ডারে কনভার্ট করলেও অভাব থেকে যাচ্ছে । সেই কারণেই দ্বিগুণ পয়সা দিয়ে কিনতে হচ্ছে অক্সিজেন সিলিন্ডার । অক্সিজেন ডিলার এবং প্লান্ট মালিকদের দাবি, রাজ্যে সিলিন্ডার উৎপাদন না হওয়ার কারণেই কালোবাজারি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে হুগলি সহ গোটা রাজ্যে ।
গোটা দেশে যখন মেডিকেল অক্সিজেনের অভাবে সাধারণ মানুষ জেরবার হয়ে গিয়েছিল । সেই সময় রাজ্যেও যখন শুরু হয়েছিল অক্সিজেনের কালোবাজারি । তবে তরল অক্সিজেন নিয়ে খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয়নি হুগলি জেলাকে । শুধুমাত্র অভাব ছিল সিলিন্ডারের ৷ এই রাজ্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার উৎপাদন হয় না । তার ফলে অনেকটাই অভাব দেখা দিয়েছিল রাজ্য সহ জেলাজুড়ে । চাহিদা মতো রিফিলিং সিলিন্ডার না পাওয়ায় কৃত্রিম কালোবাজারি শুরু হয়েছিল । সর্বনিম্ন যে সিলিন্ডার রিফিলিং করতে খরচ পড়ে 300 টাকা । সেই সময় সিলিন্ডার রিফিলিংয়ের জন্য খরচ হচ্ছিল 500 থেকে 600 টাকা । সেই সঙ্গে ডিলারের কাছে ডিপোজিট মানি রাখতে হতো 15 থেকে 18 হাজার টাকা মতো । আবার প্রতিদিন 5 টাকা করে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হতো রোগীর পরিবারকে । করোনা মতো অতিমারির সময়ে একপ্রকার অক্সিজেন নিয়ে অরাজকতা চলেছে সেই সময় । সেই সুযোগে একদল অসাধু ব্যবসায়ী মুনাফা কামিয়ে লাভবান হচ্ছিলেন ।
তবে, করোনা সংক্রমণ এখন কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে এসেছে । তাতে অক্সিজেনের চাহিদা কিছুটা কমেছে ঠিকই । কিন্তু সিলিন্ডারের অভাব এখনও রয়ে গেছে ৷ রাজ্য সরকার সিলিন্ডারের অভাবের কথা মাথায় রেখে ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিলিন্ডারগুলিকেও মেডিকেল সিলিন্ডার হিসেবে ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে । তা সত্ত্বেও ব্যবসায়ীদের দাবি, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বহু রোগীর পরিবার অক্সিজেনের সিলিন্ডার আটকে রেখে দিচ্ছে ৷ তার ফলে সিলিন্ডার নিয়ে যে সমস্যা ছিল, সেটা রয়েই গেছে । পরবর্তীকালে করোনার তৃতীয় ঢেউ রাজ্যে এলে আবারও অক্সিজেন নিয়ে সমস্যা হবে বলে মনে করছে ব্যবসায়ীরা ৷ সেই পরিপ্রেক্ষিতে পর্যাপ্ত সিলিন্ডার না থাকলে আবারও অক্সিজেন নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে সাধারণ মানুষকে । মূলত এই অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলি উৎপাদন করে মহারাষ্ট্র, গুজরাতের মতো রাজ্যগুলি । আর সেখান থেকেই সাপ্লাই হয় পশ্চিমবঙ্গে ৷ কিন্তু করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সিলিন্ডারের উৎপাদন কম ৷ সেই সঙ্গে ট্রান্সপোর্টের সমস্যার কারণে পর্যাপ্ত সিলিন্ডারের অভাবে তৈরি হয়েছে । আগামিদিনে সিলিন্ডারের সমস্যা না থাকলে এ রাজ্যে অক্সিজেনের অভাব হবে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা ।
আরও পড়ুন : অভিযান হতেই বেআইনি মজুত ২০০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার স্বাস্থ্য দফতরকে তুলে দিল কারখানা কর্তৃপক্ষ