গুড়াপ, 22 জুলাই : টালির ঘরে দু'মুঠো খেয়েই শুরু হয়েছিল স্বপ্নবোনা ৷ চাষবাস করে ছেলেদের পড়াশোনা করিয়েছিলেন কোনওমতে ৷ এই মুহূর্তে ঘরের উচ্চতা যা সেটাই হবে বলে কোনওদিন ভাবতে পারেননি কুমার দম্পতি ৷ চাঁদ তো অনেক দূর ৷ ফলে আজ যখন ছেলের তৈরি অ্যান্টেনা সঙ্গে নিয়ে চাঁদে পাড়ি দিল চন্দ্রযান-2 তখন আনন্দে নাচতে ইচ্ছে করছিল মধুসূদনবাবুর ৷ টিভির সামনে বসেই ছেলের সাফল্য উপভোগ করলেন ISRO-র প্রজেক্ট ডিরেক্টর চন্দ্রকান্ত কুমারের বাবা মধুসূদন কুমার ও মা অসীমাদেবী ৷
না ভেবেই নাম রেখেছিলেন চন্দ্রকান্ত । গুড়াপের এই ব্যক্তির নামই জুড়ে গেছে ভারতের চন্দ্র অভিযানের সঙ্গে । তাঁর তৈরি অ্যান্টেনার মাধ্যমেই পৃথিবীর কক্ষপথ ছাড়িয়ে সৌরমণ্ডল থেকে বার্তা পাঠাবে ভারতের চন্দ্রযান-২ । আজ গোটা পৃথিবীর চোখ ছিল এই চন্দ্রযান-2 এর উৎক্ষেপণের দিকে । সেই আনন্দে হুগলির গুড়াপের শিবপুরে সকাল থেকেই চন্দ্রকান্ত কুমারের বাড়িতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো ৷ উৎক্ষেপণের সময় করজোড়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে দেখা যায় অসীমাদেবীকে । প্রতিবেশীদের সঙ্গে হাততালি দেন মধুসূদনবাবুও ৷ উচ্ছ্বাস ধরে ধরে রাখতে পারেননি তিনি ৷ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আবেগতারিত মধুসূদনবাবু বলেন, "ছেলের এত বড় সাফল্যে আনন্দে নাচতে ইচ্ছে করছিল । এত আনন্দ হচ্ছিল যে আমি নাচতে চাইছিলাম । আমার ছেলের উদ্যোগে এত বড় সাফল্য খুবই আনন্দের ৷ গর্বেরও বটে ৷" তিনি আরও বলেন, " আমাদের পরিশ্রমটা বললে বেশি বলা হবে । পরিশ্রম যথেষ্টই হয়েছে । আগে আমাদের বাড়ি এরকম ছিল না । টালির ঘর ছিল । সেই অবস্থায় চাষ করেছি শুধু ছেলেদের জন্য । আমাদের কোনও বিলাসিতা নেই । ভালো খাব এই আশা করিনি । ছেলেদের পড়াশোনার খরচ ওই চাষবাস থেকেই । ঠাকুর মুখ তুলে চেয়েছেন । আরও ভালো হবে । "