পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

বাড়ি ফিরলে বুকে জড়িয়ে ধরব, বললেন ISRO-র বিজ্ঞানী চন্দ্রকান্তর মা-বাবা

ছেলের তৈরি অ্যান্টেনা সঙ্গে নিয়ে চাঁদে পাড়ি দিল চন্দ্রযান-2 ৷ উচ্ছ্বসিত বাবার আনন্দে নাচতে ইচ্ছে করছিল তখন ৷ টিভির সামনে বসেই সাফল্য উপভোগ করলেন ISRO-র প্রজেক্ট ডিরেক্টর চন্দ্রকান্ত কুমারের বাবা মধুসূদন কুমার ও মা অসীমাদেবী ৷

By

Published : Jul 22, 2019, 6:22 PM IST

Published : Jul 22, 2019, 6:22 PM IST

Updated : Jul 22, 2019, 9:25 PM IST

মধুসূদন কুমার ও অসীম দেবী

গুড়াপ, 22 জুলাই : টালির ঘরে দু'মুঠো খেয়েই শুরু হয়েছিল স্বপ্নবোনা ৷ চাষবাস করে ছেলেদের পড়াশোনা করিয়েছিলেন কোনওমতে ৷ এই মুহূর্তে ঘরের উচ্চতা যা সেটাই হবে বলে কোনওদিন ভাবতে পারেননি কুমার দম্পতি ৷ চাঁদ তো অনেক দূর ৷ ফলে আজ যখন ছেলের তৈরি অ্যান্টেনা সঙ্গে নিয়ে চাঁদে পাড়ি দিল চন্দ্রযান-2 তখন আনন্দে নাচতে ইচ্ছে করছিল মধুসূদনবাবুর ৷ টিভির সামনে বসেই ছেলের সাফল্য উপভোগ করলেন ISRO-র প্রজেক্ট ডিরেক্টর চন্দ্রকান্ত কুমারের বাবা মধুসূদন কুমার ও মা অসীমাদেবী ৷

না ভেবেই নাম রেখেছিলেন চন্দ্রকান্ত । গুড়াপের এই ব্যক্তির নামই জুড়ে গেছে ভারতের চন্দ্র অভিযানের সঙ্গে । তাঁর তৈরি অ্যান্টেনার মাধ্যমেই পৃথিবীর কক্ষপথ ছাড়িয়ে সৌরমণ্ডল থেকে বার্তা পাঠাবে ভারতের চন্দ্রযান-২ । আজ গোটা পৃথিবীর চোখ ছিল এই চন্দ্রযান-2 এর উৎক্ষেপণের দিকে । সেই আনন্দে হুগলির গুড়াপের শিবপুরে সকাল থেকেই চন্দ্রকান্ত কুমারের বাড়িতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো ৷ উৎক্ষেপণের সময় করজোড়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে দেখা যায় অসীমাদেবীকে । প্রতিবেশীদের সঙ্গে হাততালি দেন মধুসূদনবাবুও ৷ উচ্ছ্বাস ধরে ধরে রাখতে পারেননি তিনি ৷ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আবেগতারিত মধুসূদনবাবু বলেন, "ছেলের এত বড় সাফল্যে আনন্দে নাচতে ইচ্ছে করছিল । এত আনন্দ হচ্ছিল যে আমি নাচতে চাইছিলাম । আমার ছেলের উদ্যোগে এত বড় সাফল্য খুবই আনন্দের ৷ গর্বেরও বটে ৷" তিনি আরও বলেন, " আমাদের পরিশ্রমটা বললে বেশি বলা হবে । পরিশ্রম যথেষ্টই হয়েছে । আগে আমাদের বাড়ি এরকম ছিল না । টালির ঘর ছিল । সেই অবস্থায় চাষ করেছি শুধু ছেলেদের জন্য । আমাদের কোনও বিলাসিতা নেই । ভালো খাব এই আশা করিনি । ছেলেদের পড়াশোনার খরচ ওই চাষবাস থেকেই । ঠাকুর মুখ তুলে চেয়েছেন । আরও ভালো হবে । "

46 বছর বয়সি চন্দ্রকান্ত কুমার বর্তমানে অন্ধ্রপ্রদেশে থাকেন । বছরে দু'বার আসেন গ্রামের বাড়িতে । গুড়াপের শিবপুর গ্রামেই তাঁর পড়াশোনা । শিবপুরের খাজুরদহ উচ্চবিদ্যা‌লয় থেকে মাধ্যমিক, ধনিয়াখালি মহামায়া বিদ্যামন্দির থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন । এরপর বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন কলেজ থেকে BSC ও রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ থেকে "রেডিয়ো ফিজিক্স অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স" নিয়ে MSC এবং MTech করেন । পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট করেন । এরপরই বেশ কয়েকটি চাকরি পালটে 2001 সালে ISRO-তে যোগ দেন । তাঁর ভাই, কুমার দম্পতির ছোটো ছেলেও রয়েছেন ISRO-তেই ৷

দেখুন ভিডিয়ো

অন্যদিকে, আজ চন্দ্রযান -2 এর সফল উৎক্ষেপণের পর আনন্দে ভাষা হারিয়েছেন অসীমা দেবী । বললেন ,"গর্ব আর আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না । খুব কষ্ট করেই বড় হয়েছে । আমরাও কষ্ট করেছি । আমাদের ছেলেও কষ্ট করেছে । আগামীদিনে আরও বড় সফলতা কামনা করি । ও বাড়ি ফিরলে বুকে জড়িয়ে ধরব ৷ ওকে আলিঙ্গন করব ৷ ও আমার গর্ভের সন্তান যে ৷"

Last Updated : Jul 22, 2019, 9:25 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details