হুগলি, 23 জুলাই : করোনা দ্বিতীয় ঢেউ এখনও যায়নি ৷ তারই মাঝে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছে চিকিৎসক মহল ৷ যা নিয়ে ইতিমধ্যে সরকারের তরফে নানা সতর্কতা অবলম্বন করার কথা বলা হচ্ছে ৷ কিন্তু, দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ কমতেই ফের একবার বেলাগাম হয়ে উঠেছে মানুষ ৷ লকডাউন শিথিল হতেই নিয়মবিধির তোয়াক্কা না করে অধিকাংশই মাস্ক ছাড়া বেরিয়ে পড়ছেন ৷ যে ছবি ধরা পড়েছে হুগলি জেলায় ৷ ইতিমধ্যে হুগলির গোঘাট, জাঙ্গিপাড়া, সিঙ্গুর, পোলবা, কোন্ননগর ও চুঁচুড়ায় কনটেনমেন্ট ও মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন তৈরি করা হয়েছে সংক্রমণের জেরে ৷ এই পরিস্থিতিতে মানুষের এমন বেলাগাম আচরণ করোনার তৃতীয় ঢেউকে আরও বেশি করে ভয়ঙ্কর করে তুলতে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা ৷ আর যার প্রভাব সবচেয়ে বেশি শিশুদের উপর পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে ৷ কারণ প্রাপ্তবয়স্কদের ভ্যাকসিনেশন হলেও, শিশু ও কিশোরদের ভ্যাকসিনেশন এখনও হয়নি ৷ ফলে তাঁদের সংক্রমিত হওয়া সম্ভাবনা বেশি বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা ৷ আর তাদের মধ্যে সংক্রমণ ঠেকাতে একমাত্র মাস্ক ব্য়বহার সহ অন্যান্য কোভিডবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা ৷
এ নিয়ে চুঁচুড়া জেলা হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ পার্থ ত্রিপাঠী জানান, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রে বাচ্চাদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাটা কিছুটা বেশি দেখা গিয়েছে ৷ বাচ্চাদের হাসপাতালেও ভর্তি হতে দেখা গিয়েছে ৷ তবে, এখনও পর্যন্ত করোনায় শিশু এবং কিশোরদের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়নি । করোনায় যে সমস্ত শিশুর মৃত্যু হয়েছে সেগুলির ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, অন্য রোগে আক্রান্ত ছিল তারা ৷ তবে, তিনি সাবধান করেছেন, যে শিশুরা ক্যান্সারে বা হৃদরোগে আক্রান্ত, তাদের ক্ষেত্রে করোনা মারাত্মক আকার নিতে পারে । তৃতীয় ঢেউয়ে 18 বছরের বেশি বয়সীদের ভ্যাকসিনেশন হওয়ার কারণে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা কম ৷
অন্যদিকে, 18 বছরের নিচের শিশু ও কিশোরদের ভ্যাকসিনেশন হয়নি । বাড়িতে থাকার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়েনি ৷ ফলে 18 বছরের কমবয়সীদের করোনা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকছে । সেই জায়গা থেকে বলা হচ্ছে, যে মিউটেটেড ভাইরাস আসবে ৷ সেই ভাইরাসে শিশুদের আক্রান্ত হওয়া সংখ্যা বেশি থাকবে ৷ ডব্লুএইচও এবং এআইএমএস এনিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে ৷ তবুও সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে বলে জানাচ্ছেন চুঁচুড়া জেলা হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ৷ ভারত সহ পশ্চিমবঙ্গে শিশুরা করোনা আক্রান্ত হলে কীভাবে সুস্থ করা হবে, সে নিয়ে ইতিমধ্যে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে । তার জন্য প্রতিটি জেলা হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক ইনসেন্টিভ কেয়ার ইউনিট (MICU) এবং নিউনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (NICU) চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চুঁচুড়া জেলা হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ পার্থ ত্রিপাঠী ৷
আরও পড়ুন : অক্টোবরেই করোনার তৃতীয় ঢেউ ? কতটা সুরক্ষিত শিশুরা...