মুখ্যমন্ত্রীর সিল্ক হাবের স্বপ্ন এখন বিশ বাঁও জলে! শ্রীরামপুর, 12 সেপ্টেম্বর:প্রায় একশো বছর ধরে শ্রীরামপুরের সিল্ক প্রিন্টিংয়ের জন্য বিখ্যাত। কয়েকশো কারখানা ছিল শ্রীরামপুর ও শেওড়াফুলিজুড়ে। এই শিল্প কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করে। সেই কথা মাথায় রেখেই ছোট, বড় কারখানা নিয়ে একই ছাদের তলায় তৈরি হওয়ার কথা ছিল সিল্ক হাবের। মুখ্যমন্ত্রীর শিলান্যাস করা শ্রীরামপুরের সিল্ক হাব এখনও অথৈ জলে পড়ে রয়েছে। কিন্তু সরকারি তরফে এখনও এই ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য একটি ইটও গাঁথা হয়নি। প্রথম দিকে জমিজটের কারণে ক্ষোভ, বিক্ষোভ থাকলেও বর্তমানে তা সমাধান হয়ে যায় বলে দাবি করা হয়েছে ৷ তবে, এই শিল্পের কী ভবিষ্যত তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা।
প্রায় 9 বছর হয়ে গেলেও প্রস্তাবিত সিল্ক হাব নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ব্যবসায়ী ও শিল্পীদের মনে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এখানে নিচু জায়গায় জল থাকার কারণে সীমানায় পাঁচিল তৈরি করার সমস্যা হচ্ছে । হুগলির জেলাশাসক পি দীপাপ্রিয়া বলেন, "সিল্ক হাবের জমি জলা হওয়ার কারণে সীমানায় পাঁচিল করা সম্ভব হচ্ছে না। জল কমলেই কাজ শুরু করবে পূর্তদফতর। ইতিমধ্যেই সিল্ক প্রিন্টিংয়ের দূষণের জন্য পরিকল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্যান্য কারখানাগুলিতেও দূষণের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে ।
শ্রীরামপুর সিল্ক প্রিন্টার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ বণিক বলেন, "এ সবচেয়ে পুরনো শিল্প। কিন্তু সরকার কোনও গুরুত্ব দিল না। শিল্যান্যাস হয়েছে অনেক বছর হয়ে গেল। প্রায় 25 বছর ধরে আমরা লড়াই করছি। সুরাট বেনারসের মতো জায়গায় কারখানা গুলি যেভাবে উন্নতি করছে, সেই তুলনায় শ্রীরামপুর সিল্ক প্রিন্টিং কিছুই করতে পারছে না। আমরা চাই সিল্ক হাব তৈরি হোক। সরকারি তরফে শুধুমাত্র আধিকারিকরা এসে মিটিং করছে কিন্তু কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না।" শ্রীরামপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান গিরিধারী সাহা বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী কুটির শিল্পের উপর জোর দিয়েছিলেন। সিল্ক হাব তৈরি করা তাঁর স্বপ্ন ছিল। আমরা চাই যাতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শ্রীরামপুরের মানুষের স্বার্থে কুটির শিল্প তৈরি হোক।"
সরকার 2014 সালে শ্রীরামপুরের স্লিক প্রিন্টিংয়ের জন্য স্লিক হাবের চিন্তাভাবনা করেন। সেই মতো সিল্ক হাবের শিল্যান্যাস করা হয়। কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে এই শিল্প তৈরি করার চিন্তাভাবনা করেছিল বর্তমান সরকার। শ্রীরামপুরের তারাপুকুর, রাজ্যধরপুর, পিয়ারাপুর, নওগাঁ, মরাদান, বউবাজার-সহ আশপাশে সিল্ক প্রিন্টিংয়ের ছোট, বড় বহু কারখানা রয়েছে। সিল্ক হাব হলে নতুন দিশা পাবেন কারখানার মালিক থেকে শ্রমিকরা।
ইতিমধ্যে সিল্ক প্রিন্টিংয়ের কারণে দূষণের জন্য আইআইটি খড়গপুর থেকে বিশেষ ব্যবস্থার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:চিন-জাপানকে টেক্কা দেবে মালদার রেশম সুতো, সরকারি উদ্যোগে বসল মাল্টি অ্যান্ড রিলিং মেশিন