মাছ চাষিদের দেওয়া ফাঁসজালে আটকে মাছরাঙা ব্যান্ডেল, 25 জুলাই: পুকুরে মাছ চাষিদের দেওয়া ফাঁসজাল তৈরি হয়েছে মরণফাঁদ। সেই জালে আটকে মারা যাচ্ছে মাছরাঙা, বক ও বিরল প্রজাতির পাখিরা। মূলত শিকারি পাখিদের থেকে মাছকে রক্ষার জন্য পুকুরজুড়ে জাল দেওয়া হয়। হুগলি জেলায় বিভিন্ন পুকুরে মাছ চাষের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বিশেষ ধরনের একটি জাল। পুকুরে মাছ ও অন্যান্য পোকামাকড় খেতে এসে আটকে পড়ে অধিকাংশ মাছ শিকারি পাখিরা। এমনকী আটকে থেকে মৃত্যু হয় বক ও পরিযায়ী পাখিদের। এর ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। তাতেই চিন্তিত পরিবেশপ্রেমী ও পক্ষীবিদরা।
এইসময় বিভিন্ন পরিযায়ী পাখি আসে নানা পুকুর ও ঝিলে। জল খেতে গিয়ে ফাঁস জালে আটকে পড়ে। জেলার বিভিন্ন জায়গায় পাখিপ্রেমীরা এ বিষয়ে কাজ করছেন। আহত পাখিদের উদ্ধার করে পুনরায় প্রকৃতির মধ্যে ফিরিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। তবে এ বিষয়ে হেলদোল নেই প্রশাসনের। বনদফতর গুরুত্ব দিয়ে না-দেখলে অবিলম্বে মাছ শিকারি পাখিরা বিলুপ্তির পথে চলে যাবে। যদিও মৎস্য দফতর সচেতন ক্যাম্প করার জন্য উদ্যোগ নেওয়ার দাবি করেছে।
আরও পড়ুন:হিমাচলের পং হ্রদে রাশিয়ার লং টেলড ডাক ! 1 লক্ষেরও বেশি পরিযায়ী পাখি
যদিও পাখিপ্রেমীরা এই ধরনের ঘটনা দেখলে ডাকা দেন পশুপ্রেমী চন্দন ক্লেমেন্ট সিংকে। তিনি বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে পাখিদের উদ্ধার করেন। এই পশুপ্রেমীর দাবি, পুকুর মালিক ও চাষিদের সচেতন করতে হবে যাতে এই ধরনের ফাঁস জাল ব্যবহার না-করে। তাহলে অদূর ভবিষ্যতে শিকারি পাখিদের অস্তিত্ব হারিয়ে যাবে। এছাড়াও বেশকিছু পাখি যেমন বারবেট, পেরিগ্রিন, ফ্যালকন পাখির মতো কিছু পাখি পুকুরের আশেপাশে দেখা যায়, ওরা পুকুরের ধারে ঘুরে বেরিয়ে পোকামাকড় ও নানা প্রাণী খেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রক্ষা করে। তারা মারা গেলে ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে।
বনদফতরের হাওড়া ডিভিশনের এক আধিকারিক জানান, তাঁদের কাছে কোনও অভিযোগ এলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাখিপ্রেমী চন্দন ক্লেমেন্ট সিং বলেন, "বিশেষ করে মাছই ওদের খাবার, তা শিকার করতে গিয়ে ফাঁদে পড়ে মৃত্যু হচ্ছে। এখানে বন্য পশুপাখি আইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে। বনদফতরের যে আইন রয়েছে তা সঠিক ব্যবহার হওয়া উচিত।" হুগলির উপ মৎস্য আধিকারিক সুব্রত সরকার বলেন, "চাষিরা মাছ রক্ষা করার জন্য হয়তো এটা করছেন। যার ফলে পাখিরা জালে আটকে পরে মারা যাচ্ছে। বনদফতরের আইন অনুযায়ী এটা অন্যায়। জাল ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে। সেজন্য সচেতন ক্যাম্প করার চেষ্টা করব।"
আরও পড়ুন:বৃষ্টি না-হওয়ায় কুলিক পক্ষীনিবাসে দেখা নেই পরিযায়ী পাখিদের, মন খারাপ পর্যটকদের