হুগলি, 7 অক্টোবর : ভদ্রেশ্বর বিঘাটিতে দিল্লি রোডের পাশের নয়ানজুলি বুজিয়ে মদের দোকান হচ্ছে ৷ জানে না প্রশাসন ! প্রকাশ্য দিবালোকে লরি লরি বর্জ্য ফেলে বুজিয়ে ফেলে হচ্ছে জাতীয় সড়কের পাশের খালটি ৷ এই খালটিই স্থানীয় সিঙ্গুর ব্লকের বিঘাটি গ্রাম পঞ্চায়েত সহ বেশ কিছু গ্রামের বর্ষার জমা জল নিকশির একমাত্র মাধ্যম ৷ কিছুদিন আগেই পঞ্চায়েতের উদ্যোগে খাল সংস্কার করা হয়েছে ৷ যেহেতু এই খাল বুজলে জলমগ্ন হবে এলাকা ৷ প্রশ্ন হল, তাহলে সরকারির জমি খাল বোজানোর অনুমতি দিল কে?
খাল ভরাট করার ছবি তুলছে দেখে কোথা থেকে যেন ছুটে এলেন স্থানীয় ধোবা পুকুরের হোটেল ব্যবসায়ী নিতাই মান্না ৷ নিতাইবাবু গলা উঁচিয়ে সাফ জানালেন যে তিনিই খাল ভরাট করছেন ৷
নিতাই মান্না বলেন, " ইংলিশ মদের দোকান দেব এখানে ৷ লাইসেন্স হয়ে গেছে ৷ তবে কালভার্ট করে দেব ৷"
এই বিষয়ে অনুমতি আছে কি-না জানতে হলে বলেন, "প্রধান দীপক পাকিরা আমার কাকা ৷ পারলে কাজ বন্ধ করুন" ৷
বিঘাটিতে মদের দোকান হবে বলে বোজানো হচ্ছে খাল ৷ নিতাই মান্নার কথা অনুযায়ী প্রায় পঞ্চাশ মিটার খাল বুজিয়ে তিন কাটা জমিতে মদের দোকান করবেন তিনি ৷ তবে নিজেকে তৃণমূল পরিচালিত বিঘাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের "ভাইপো" বলে পরিচয় দিলেও সে কথা শুনে প্রধান হেসে ফেললেন ৷ পঞ্চায়েত প্রধান দীপক পাকিরার কথায়, কদিন আগেই খাল ড্রেজিং করিয়েছে ৷ এসব দুষ্কৃতীরা করছে ৷
দীপকবাবুর কথায়, "মানুষের সমস্যার জন্য নয়ানজুলি সংস্কার করা হচ্ছে পঞ্চায়েতের তরফে । যারা এসব করছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযত ব্যবস্থা নেব । পুলিশকে জানিয়েছি মৌখিকভাবে ৷ ওই ব্যবসায়ী আমার কেউ হয় না ৷ "
খাল বোজানোর ঘটনা শুনে প্রধানের বিরুদ্ধে সুর চরালেন তৃণমূলেরই পঞ্চায়েতের সদস্য শুভেন্দু মণ্ডল । বললেন, "পঞ্চায়েতে আলোচনা না করেই নয়নজুলি সংস্কার করাচ্ছে প্রধান । সবই একা করছেন । প্রধানকে টাকা খাইয়ে নয়ানজুলি ভরাট করছে বোধ হয় ! ওই ব্যবসায়ী প্রধানের আত্মীয় বলে পরিচয় দিচ্ছে যখন, তখন নিশ্চয়ই বিষয়টি জানেন ।"
তবে, হুগলির জেলাশাসক ওয়াই রত্নকর রাও জানালেন, উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ৷ তিনি বলেন, "জায়গাটিকে চিহ্নিত করে স্থানীয় BLRO-র মাধ্যমে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব ৷"