শ্রীরামপুর, 16 ফেব্রুয়ারি : সুরকার, গায়ক, সঙ্গীত পরিচালক ৷ সঙ্গীত জগতের সদ্য প্রয়াত বাপী লাহিড়ী ছিলেন আদ্যোপান্ত সুরের জগতের মানুষ ৷ এছাড়া তাঁর রুচি ছিল সোনার গয়নার প্রতি ৷ বাপ্পি লাহিড়ীর স্টাইল কোশেন্ট ৷ এসব তথ্য সবার জানা ৷ কিন্তু জানেন কি সঙ্গীত জগতের এই দিকপাল মানুষটি একসময় রাজনীতির আঙিনাতেও পা রেখেছিলেন (Bappi Lahiri Political career) ৷ আর রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ভাগ্য পরীক্ষার জন্য বেছে নিয়েছিলেন নিজের জন্মভূমি, এই বাংলাকে !
বুধ সকালে একটা মনখারাপ করা খবরে ঘুম ভেঙেছে দেশবাসীর ৷ দীর্ঘ রোগভোগের পর পরলোকে পাড়ি দিয়েছেন সুরের স্র্ষ্টা বাপ্পি লাহিড়ি ৷ যাঁর সুরে সুরালোকিত হয়েছে বাংলা থেকে হিন্দি সিনেমার জগত ৷ তবে বাংলার তুলনায় বলিউডে তাঁর কাজের পরিধি ছিল অনেকটাই বেশি ৷ দীর্ঘ সময় ধরে নিজের সুরে আচ্ছন্ন করে রেখেছেন অনুরাগীদের ৷ সাধারণত এমন শিল্পীরা রাজনীতির জগত থেকে দূরেই থাকেন ৷ কিন্তু জলপাইগুড়ির মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে গানের জগতের ডিস্কো কিং হয়ে ওঠা মানুষটি রাজনীতিতেও ভাগ্য পরীক্ষার লড়াইয়ে নেমে পড়েছিলেন (Bappi Lahiri in politics) ৷ হতে পারে তাতে সফল হননি ৷ তাঁর মৃত্যুর পর এই অজানা দিকটি সাধারণের সামনে এসেছে ৷
বাংলায় তখন ঘাসফুলের হাওয়া ৷ দীর্ঘ বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে 2011 সালে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ কিন্তু বাপ্পী লাহিড়ী সেই স্রোতে গা ভাসাননি ৷ বরং গেরুয়া শিবিরের হাত ধরে রাজনীতির জগতে তাঁর প্রবেশ ৷ 2014 সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে শ্রীরামপুর থেকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন ৷ উল্টোদিকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ রাজনীতির ময়দানে কেমন লড়াই দিয়েছিলেন সুরের জগতের রাজা ? শিল্পীকে কাছে পেয়ে শ্রীরামপুরের মানুষের কী প্রতিক্রিয়া ছিল ? আজ তাঁর প্রয়াণের আট বছর আগের স্মৃতির ঝাঁপি খুলেছেন শ্রীরামপুরবাসী ৷
আরও পড়ুন : Usha Uthup remembers Bappi Lahiri : গয়না পরতেন তো কী ! তিনি চেয়েছিলেন রকস্টার হতে, হয়েওছেন: ঊষা উত্থুপ
দক্ষিণেশ্বরে পুজো দিয়ে সেবার নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন বাপ্পী লাহিড়ী । উত্তরপাড়া থেকে শ্রীরামপুরে আসার সময় পথঘাটে জনবিস্ফোরণ ঘটেছিল ৷ চারিদিকে মানুষের উল্লাস ৷ শ্রীরামপুরের মানুষজন উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন সঙ্গীত শিল্পীকে । উত্তরপাড়া থেকে চাঁপদানি পর্যন্ত গানে গানে প্রচার করেছিলেন । তাঁর জনপ্রিয়তার সামনে একটু যেন পিছিয়েই ছিলেন তৃণমূলের দাপুটে নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনিও সেলিব্রিটি প্রতিদ্বন্দ্বীকে লড়াই ছুঁড়ে দিয়েছিলেন গানের মাধ্যমেই ৷ অবশ্য শেষমেশ রাজনীতির ময়দানে হারতে হয়েছিল বাপ্পী লাহিড়ীকে । তবে শ্রীরামপুরের বিজেপি নেতৃত্ব ও মানুষের মধ্যে 'সঙ্গীতশিল্পী' বাপ্পি লাহিড়ী চিরকাল বেঁচে থাকবেন ৷ শ্রীরামপুরের বর্তমান সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় শোক প্রকাশ করতে গিয়ে বলেছেন, "রাজনৈতিকভাবে লড়াই হয়েছিল । বাপ্পি লাহিড়ীর গান দিয়েই তাঁর বিরুদ্ধে প্রচার করেছিলাম । মুম্বই সে আয়া মেরে দোস্ত, দোস্তকে সেলাম কর । তবে ভোটের পর থেকে আর যোগাযোগ ছিল না । ওঁনার আত্মার শান্তি কামনা করি ।"