বৈদ্যবাটি, 14 অক্টোবর : মাত্র আট বছর বয়স থেকে প্রতিমা তৈরি করা শুরু ৷ নিজেই পুজো করেন ৷ বৈদ্যবাটির কলেজ পড়ুয়া সৌগত ধোলের মন্ত্রশিক্ষার পাঠ নেই ৷ মূর্তি তৈরির কাজও শেখেননি কারও থেকে ৷ ভক্তি ও নিষ্ঠায় ভর করে নিজে নিজেই আয়োজন করে ফেলেছেন আস্ত একটি দুর্গাপুজোর ৷ প্রথম দিকে ছোটো ঠাকুর বানাতেন । এবছর রীতিমতো একচালার প্রতিমা বানিয়েছেন রিষড়া বিধান কলেজ থেকে বাণিজ্যে স্নাতক সৌগত ।
দেবকুমার এবং মণিকা ধোলের একমাত্র ছেলে সৌগত । দেবকুমারের দুধ-পনিরের ব্যবসা । বাড়িতে গোটা কুড়ি গরু আছে ৷ তা দিয়েই সংসার চলে । বাবার কাজে সাহায্য করে সৌগত । ভাল পনির বানাতে পারেন । তার সঙ্গেই ভাল ঠাকুরও তৈরি করেন । বৈদ্যবাটি চকগোয়ালা পাড়ায় দুর্গাপুজো হয় । সেই ঠাকুর পাড়াতেই তৈরি হতো । খুব ছোট বয়সে থেকেই সৌগত সেই ঠাকুর তৈরি দেখে নিজেই কাদা দিয়ে ঠাকুর তৈরি করতে থাকে । একটু বড় হওয়ার পর ঠাকুর তৈরি করে বাবা-মায়ের কাছে জানতে চাইত তা কেমন হয়েছে ৷ ভাল না হলে ভেঙে ফেলে আবার নতুন করে তৈরি করত । এইভাবে বছর বছর সে নিজেই দুর্গা ঠাকুর তৈরি করে নিজেই পুজো করতে থাকে । সৌগত বলছেন, "মা দুর্গার রূপ অতসী পুষ্পের রঙের এর এবং চোখ টানা টানা ৷ সেই কারণেই হলুদ রঙের একচালা আদি মূর্তিতেই মাকে পুজো করে আসছি ।"
দুর্গাপুজোর অনেক নিয়ম, উপাচার রয়েছে । স্বাভাবিক ভাবেই সেগুলো সৌগত জানত না । পাড়ার বারোয়ারি পুজো খুব মনোযোগ দিয়ে দেখত । পাশাপাশি নিজেও পুজো করত ৷ অব্রাহ্মণ হয়েও কী করে পুজো করছে তা নিয়ে পাড়ায় একটু-আধটু চর্চা শুরু হয় ৷ তখন সৌগতর বাবা পুরোহিত ডেকে পুজো করানোর কথা বলেন । তখনই বৈদ্যবাটির এক টোলের পণ্ডিত নবকুমার ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে সৌগত ৷ পণ্ডিত মশাই উপদেশ দেন, পুজো করতে গেলে শুধু ব্রাহ্মণ হতে হবে এমন কোনও মানে নেই । মা দুর্গার প্রতি নিষ্ঠা এবং শ্রদ্ধা থাকলে যে কেউ পুজো করতে পারে । শ্রদ্ধা ও ভক্তি ভরে একটা ফুল দিয়ে পুজো দিলেও মা সন্তুষ্ট হন । পরে ওই পণ্ডিতই সৌগতকে দুর্গাপুজোর নিয়ম শিখিয়ে দেন ।