মানকুণ্ডু, 8 মার্চ: আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস ৷ একা হাতে সংসারের দায়িত্ব সামলাচ্ছে, এ যুগে এমন মহিলার সংখ্যা নেহাত কম নয় ৷ শহর থেকে গ্রামগঞ্জের প্রান্তিকে ছড়িয়ে আছেন তাঁরা ৷ তাঁদের একেকটা জীবন, সংগ্রামের গল্প যেন চলচ্চিত্রকেও হার মানায় ৷ তেমনই একজন হুগলির মানকুণ্ডুর বেবী বিশ্বাস ৷ 15 বছর ধরে খাবারের ব্যবসা করে সংসারের সব খরচখরচা চালিয়ে যাচ্ছেন বেবী বিশ্বাস ৷ মানকুন্ডু স্টেশন রোডে তাঁর ছোট্ট খাবারের স্টল ৷ তাতে 22 থেকে 25 রকমের খাবারের রেসিপি থাকে ৷ সব নিজে হাতেই রান্না করেন তিনি ৷ দূর-দূরান্ত থেকে তাঁর দোকানে খাবার কিনতে আসেন ক্রেতারা ৷ এ ভাবে কঠিন পরিশ্রম করে অসুস্থ বাবার চিকিৎসা ও ছেলের পড়াশোনার খরচ বহন করছেন বেবী দেবী ৷ কীভাবে শুরু হল তাঁর লড়াই (Baby Biswas cooks food and sells at Mankundu Hooghly) ?
মানকুণ্ডুর ঝিলপাড়ের বাসিন্দা বেবী বিশ্বাস ৷ পরিবারে আর্থিক সমস্যার কারণে পড়াশোনা করা হয়ে ওঠেনি বেশিদূর ৷ শৈশব থেকে বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার করেছেন তিনি ৷ পরে একটু বড় হয়ে কলকাতায় গেঞ্জি কারখানায় কাজ করতে যান ৷ বিয়ে হওয়ার পর স্বামীকে নিয়ে বাড়িতেই গেঞ্জি কারখানা করেন বেবী বিশ্বাস । কিন্তু দেনায় জর্জরিত হওয়ার ফলে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায় ৷ ফের গেঞ্জি কারখানায় কাজ করতে যান বেবী ৷ ভালো রান্না করতেন ৷ সেটাকে হাতিয়ার করে স্টেশন রোডে ঘুগনি রুটি বিক্রি করা শুরু করলেন ৷ এইভাবে দিন কেটে যাচ্ছিল ৷ এর মধ্যে স্বামীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় ৷ এরপর টানা 12 বছর একা লড়ে গিয়েছেন তিনি ৷ একমাত্র ছেলে কলেজে পড়ছে ৷ অসুস্থ বাবা-মাকে নিয়ে এখন বাপের বাড়িতে থাকেন মানকুণ্ডুর বেবী বিশ্বাস । সকাল 8 টায় তাঁর দিন শুরু হয় ৷ বিক্রিবাট্টা চলে রাত 12 পর্যন্ত ৷ প্রতিদিন একা হাতে 22 থেকে 25 রকমের পদ রাঁধেন তিনি ৷
আরও পড়ুন:নিরক্ষর-গরিব মহিলা শ্রমিকদের সঞ্চয়ে তৈরি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা