হুগলি, 20 জুলাই: চলতি বছর বৃষ্টির পরিমাণ কম হওয়ায় ধান চাষ নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা ৷ এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে ধানের ফলনে প্রভাব পড়বে বলে চাষিদের আশঙ্কা ৷ তাই প্রশাসনের তরফে বিকল্প উপায়ে চাষের জলের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে ৷ সেচের মাধ্যমে যাতে চাষ হয়, তার জন্য নদী-নালা ও গভীর নলকূপগুলি কীভাবে ব্যবহার করা যায় চাষের কাজে, সেই বিষয়ে ইতিমধ্য়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন সরকারি আধিকারিকরা ৷ এছাড়াও বীজতলা না করে শ্রী বা ড্রামসিডার পদ্ধতিতে চাষের বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি আধিকারিকরা । চাষিদের বক্তব্য, প্রশাসন পাশে না দাঁড়ালে এবার তাঁদের চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে ৷
হুগলির পোলবার এক চাষি মানিক ঘোষ বলেন, ‘‘বৃষ্টির অভাবে জৈষ্ঠ্য মাসে যে বীজ ফেলা হয়েছিল, তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে ।এখন বীজতলা তৈরির সময় নেই । বীজের চারা তৈরি করতে 20 দিন সময় লেগে যাবে । তাতে চাষের সময় পেরিয়ে যাবে । ফলন ও কম হবে । বৃষ্টি না হওয়ার কারণে চাষবাস নেই । বিকল্প জলের ব্যবস্থা না থাকলে চাষি কী খাবে ? এমনিতেই সবজির দাম বেশি ৷ চাষ ছাড়া অন্য কাজও নেই রাজ্যে । বাধ্য হয়ে অন্য রাজ্যে কাজের জন্য যেতে হবে ।’’
অন্যদিকে পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে কোনও প্রভাব পড়বে না । যদি জুলাইয়ের শেষে বা অগস্ট মাসের প্রথমে বৃষ্টি না হয়, তাহলে চিন্তার বিষয় আছে । এই জন্য বিকল্প চিন্তা থাকে । এখনই হতাশ হওয়ার কিছু নেই । তবে এখন বিশ্বে রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্যের অভাব রয়েছে । চালের উপর এমনিতেই কেন্দ্র শুল্ক লাগিয়েছে । তাতে চাল রফতানি হচ্ছে । সুতরাং আমরা সচেতন এব্যাপারে । প্রাকৃতিক ও অন্য কোনোভাবে আমরা চাইব না কৃষি ক্ষেত্রে আঘাত আসুক ।’’
আমন ধান চাষের হাল-হকিকৎ: বর্ধমান, মেদিনীপুর, হুগলি-সহ একাধিক জেলায় আমন ধানচাষ হয় । পূর্ব বর্ধমান চলতি মরশুমে 3 লক্ষ 78 হাজার 220 হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হবে । গত মরশুমের তুলনায় বৃষ্টিপাত 26.6 শতাংশ কম হয়েছে । এদিকে আমন ধান রোপণের কাজ শুরু হয়েছে । তবে গত আমনের মরশুমে জুন-জুলাই মাসে 8576 হেক্টর জমি চাষ করে হয়ে গিয়েছিল । এবারে বৃষ্টিপাত কম হলেও আমন চাষের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে । বিকল্প জলের ব্যবস্থা করে ইতিমধ্যেই 10 হাজার 840 হেক্টর জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছে ।