শিলিগুড়ি, ২৭ সেপ্টেম্বর : ঐতিহাসিক শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন । যেখানে এক সময় পা পড়েছিল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মহাত্মা গান্ধি থেকে শুরু করে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, বাঘাযতীনের মত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের । শুধু তাই নয় । এই স্টেশনেই গরিবদের উপর অত্যাচার করার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন বাঘাযতীন । স্টেশনে জল নিতে আসা এক বৃদ্ধ দম্পতির ওপর অত্যাচার করায় দুই ব্রিটিশ সৈনিককে একাই পিটিয়েছিলেন তিনি ।
ইতিহাসের পাতায় সেই সব দিন অমলিন হয়ে থাকলেও অতীতের সাক্ষ্য বহন করে চলা শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনের বর্তমানে করুণ দশা । জরাজীর্ণ এবং ভঙ্গুর অবস্থায় থাকা এই টাউন স্টেশন এখনও বহন করে চলেছে ইতিহাসের সেই মুহূর্তগুলো । ১৮৭৯ সালে তৎকালীন বৃটিশ সরকার দার্জিলিং হিমালয়ান রেল-এর অধীনে শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন স্থাপন করে । সেখান থেকেই শুরু হয় দেশের অন্যতম টয়ট্রেন পরিষেবা । সেই সময় শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন থেকে পাহাড়, তরাই এবং ডুয়ার্সের পাশাপাশি কিষাণগঞ্জ হয়ে মালদা পর্যন্ত চলত ট্রেন । স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় গুরুত্ব আরও বারে এই রেল স্টেশনটির ।
তথ্য বলছে, এই স্টেশন থেকেই বিভিন্ন সময়ে ট্রেনে করে পাহাড় গিয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধি, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, মাদার টেরিজা প্রমুখ । পরবর্তীতে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের সমস্ত সম্পত্তি হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করে ইউনেস্কো । যার ফলে হেরিটেজের শিরোপা পায় শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনও । এখনও টাউন স্টেশনে গেলে পুরনো জরাজীর্ণ স্টেশনের দেওয়ালে ঝুলতে দেখা যাবে মহাত্মা গান্ধির ঐতিহাসিক মুহূর্তের কিছু ছবি । কিন্তু শিরোপা থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রায় মুছে যেতে চলেছে শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনের ইতিহাস ।