শিলিগুড়ি, ৩১ মে : শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ নির্বাচনের আগে কি অস্তাচলে বাম-কংগ্রেসের আসন সমঝোতা ! এমন প্রশ্নই বর্তমানে ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে । শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ নির্বাচনে (Siliguri Mahakuma Parishad Election) আসন সমঝোতা করেই লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস । সেইমতো মহকুমা পরিষদের 9টি আসনের মধ্যে 1টি আসন কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে দিয়ে বাকি 8টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল বামেরা । বাকি থাকা পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে একইভাবে আসন সমঝোতা করেই প্রার্থী দেওয়ার কথা জানিয়েছিল বাম নেতৃত্ব । কিন্তু মঙ্গলবার ঘটল একদমই উলটো ঘটনা । বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতার জট বাড়িয়ে মহকুমা পরিষদের 9টির মধ্যে 2টি আসনে এদিন প্রার্থী ঘোষণা করেছে কংগ্রেস ।
শুধু তাই নয় । বুধবার আরও চারটি আসনে কংগ্রেস প্রার্থী ঘোষণা করতে পারে ৷ কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তেই জল্পনা ছড়িয়েছে, তবে কি এবার ভেস্তে গেল বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের আসন সমঝোতা ? আসন সমঝোতা না-হলে কী এককভাবেই লড়াই করবে ওই দুই শিবির ? এমন প্রশ্নেই শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ নির্বাচনের আগে সরগরম এখানকার রাজনীতি । এদিন মহকুমার 9টি আসনের মধ্যে ফাঁসিদেওয়া 7 নম্বর আসন ও খড়িবাড়ির 2 নম্বর আসনে মনোনয়ন জমা দেন কংগ্রেস প্রার্থীরা ।
আরও পড়ুন : কৃষকদের থেকে ধান কেনায় গড়মিল, ধমক দিয়ে উপায় বাতলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
এই বিষয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি শঙ্কর মালাকার বলেন, "বামেরা আমাদের জন্য একটি আসন ছেড়েছে । একইভাবে আমরাও তাদের জন্য দু-একটি আসন ছাড়ব বলে ভেবেছি । এদিন দুটি আসনে প্রার্থী দেওয়া হল । আগামিদিনে চারটি আসনে আমরা প্রার্থী দেব ।" আসন সমঝোতার প্রশ্নে শঙ্কর মালাকার বলেন, "কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের পরিস্থিতি সবাই জানে । আমরা চাই বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী ভোট বাম-কংগ্রেস পাক । ঠিকঠাক সমঝোতা হলে আমরা জয়ী হতে পারি । তা না-হলে ভোট ভাগাভাগিতে আখেরে তৃণমূল ও বিজেপির লাভ হবে । তবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন পর্যন্ত আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে । দেখা যাক কী হয় ।"
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ নির্বাচনে অস্তাচলে বাম-কংগ্রেস জোট, জল্পনা রাজনৈতিক মহলে বিধানসভা নির্বাচনে আসন সমঝোতা করে কোন লাভ হয়নি বাম-কংগ্রেসের । তার পরেও সেই ধাক্কা সামলে শিলিগুড়ি পৌরনিগম নির্বাচনে দীর্ঘ টানা পোড়েনের পর কোনওমতে টিকে ছিল বাম-কংগ্রেসের জোট । কিন্তু তারপরে শিলিগুড়ি পৌরনিগমের নির্বাচনে বাম-কংগ্রেসের ফলাফল চিন্তায় ফেলেছিল দুই শিবিরকেই । দুই শিবিরই এককভাবে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছিল । তারপরেও শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ নির্বাচনে আসন সমঝোতা করে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেয় তারা । কিন্তু এ কেমন সমঝোতা? যেখানে কেউই পরস্পরকে আসন ছাড়ার জন্য রাজি নয়, এই প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে । আসন ভাগাভাগি নিয়ে বাম-কংগ্রেসের এই টানাপোড়েনের প্রভাব পঞ্চায়েত সমিতির 66টি আসন ও গ্রাম পঞ্চায়েতের 462টি আসনে পড়বে কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে ৷