শিলিগুড়ি, 1 সেপ্টেম্বর: উত্তর-পূর্ব ভারতের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ন্যাশনাল সোসালিস্ট কাউন্সিল অফ নাগাল্যান্ডের এক সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করল পুলিশ ৷ অরুণাচল প্রদেশ পুলিশের বিশেষ টিম ও শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের প্রধাননগর থানার পুলিশ এই যৌথ অভিযান চালায়। সে সময় শিলিগুড়ির কাছাকাছি একটি এলাকা থেকে জঙ্গি সন্দেহে ওই যুবককে বুধবার গ্রেফতার করা হয় । ধৃতের নাম করিম খান।
অসমের বাসিন্দা হলেও গত 6 মাস ধরে শিলিগুড়ির কাছে শালবাড়ি এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকছিল করিম। পুলিশ জানিয়েছে, শিলিগুড়িতে দিনমজুরের ছদ্মবেশে ছিল সে। প্রাথমিক তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, উত্তর-পূর্ব ভারতের গুরুত্বপূর্ণ 6টি ভাষা অনায়াসে বলতে পারে করিম। তার থেকে আরও তথ্য জানার কাজ শুরু হয়েছে।
ধৃতকে বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে পেশ করে তিনদিনের ট্রানজিট রিমান্ডে অরুণাচল প্রদেশে নিয়ে গিয়েছে সে রাজ্যের পুলিশ । ধৃতের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন, তিনটে সিম কার্ড-সহ পরিচয় পত্র ও বেশ কিছু নথি উদ্ধার হয়েছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, "অরুণাচল প্রদেশের পুলিশ আমাদের সাহায্য চায়। এরপর যৌথ অভিযান চালিয়ে যুবককে গ্রেফতার করে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে গিয়েছে। আমরাও বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি ।"
29 অগস্ট অরুণাচলের তিরাপ জেলার খোনসা থানায় এক ব্যবসায়ী একটি অভিযোগ দায়ের করেন । অভিযোগ ছিল, নাম ভাঁড়িয়ে করিম খান নিজেকে রকি থাপা বলে পরিচয় দিয়ে তাঁকে ফোন করে। পাশাপাশি ওই জঙ্গি সংগঠনের সদস্য হিসেবে ভয় দেখিয়ে ব্যবসায়ীর থেকে মোটা টাকাও দাবি করে। টাকার পাশাপাশি সংগঠনের সদস্যদের জন্য চালও চায়। ফোন পেয়েই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ব্যবসায়ী ৷ এফআইআরের ভিত্তিতে যে নম্বর থেকে ফোন এসেছিল সেটির সন্ধান শুরু করে পুলিশ।
জানা যায়, অরুণাচলে ফোন গিয়েছিল শিলিগুড়ি থেকে। এরপর অরুণাচলের পুলিশ যোগাযোগ করে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের সঙ্গে। 30 আগস্ট অরুণাচল প্রদেশ থেকে পুলিশের বিশেষ দল শিলিগুড়ি পৌঁছয়। রাতেই শালবাড়িতে চলে বিশেষ অভিযান। তাতেই গ্রেফতার হয় করিম ৷ এর আগেও করিমের বিরুদ্ধে একাধিক নানা ধরনের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এভাবে টাকা আদায় করে তা দিয়ে জঙ্গি সংগঠনের নানাবিধ কাজকর্ম হত।
আরও পড়ুন:আট বছর নিখোঁজ অরুণাচলের ব্যক্তি! অপহরণ করেছে চিনা ফৌজ, দাবি পরিবারের
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এনএসসিএন 2015 সালে অসম রাইফেলসের জওয়ানদের উপর হামলা করায় তাদের নিষিদ্ধ হিসেবে ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার । এরপর থেকেই ওই সংগঠনের সদস্যরা আত্মগোপন করে থেকে নিজেদের কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এই সংগঠনেরই সক্রিয় সদস্য করিম খান।