পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

শিলিগুড়িতে চালু হচ্ছে দেশের প্রথম টি টুরিজ়ম রিসর্ট

By

Published : Oct 14, 2020, 4:35 PM IST

অত্যাধুনিক এবং বিলাসবহুল রিসর্ট বলতে যা বোঝায় তার সব পরিকাঠামোর রয়েছে এখানে । রিসর্টের তরফে আধিকারিকেরা জানান, চা বাগানের প্রায় পাঁচ হাজার গাছ সরিয়ে দিয়ে সেখানে তৈরি করা হয়েছে এই বিলাসবহুল রিসর্টটি । এটি সাজিয়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন দুর্লভ প্রাচীন সামগ্রী দিয়ে ।

tea tourism resort in Siliguri
ছবি

শিলিগুড়ি, 14 অক্টোবর : দেশের মধ্যে প্রথম টি বুটিক রিসর্ট চালু হচ্ছে শিলিগুড়িতে। একটি হোটেল সংস্থার উদ্যোগে 200 কোটি টাকা বিনিয়োগ করে শিলিগুড়ি কাছে একটি চা বাগানে অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে চালু করা হচ্ছে এই রিসর্ট ।

শিলিগুড়ি হয়ে দাগাপুর পেরিয়ে দার্জিলিং যাওয়ার রাস্তায় শহর থেকে মাত্র 11 কিলোমিটার দূরে নিউ চামটা চা বাগানে গড়ে উঠছে এক আন্তর্জাতিক মানের বিলাসবহুল রিসর্ট । দেশের একমাত্র টি টুরিজ়ম রিসর্ট । এক হোটেল ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর উদ্যোগে প্রায় 200 কোটি টাকা বিনিয়োগ করে তৈরি করা হচ্ছে এই রিসর্ট । পর্যটকদের জন্য রিসর্টে থাকছে বিভিন্ন মনোরঞ্জনের বন্দোবস্ত । বিনিয়োগকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকার টি টুরিজ়মে উৎসাহ দেওয়ার পরেই এই ভাবনাচিন্তা তাদের মাথায় আসে । প্রায় দেড়'শো বছরের পুরনো নিউ চামটা চা বাগানের ভেতর তৈরি করা হয়েছে এই রিসর্ট । অত্যাধুনিক এবং বিলাসবহুল রিসর্ট বলতে যা বোঝায় তার সব পরিকাঠামোর রয়েছে এখানে । রিসর্টের তরফে আধিকারিকেরা জানান, চা বাগানের প্রায় পাঁচ হাজার গাছ সরিয়ে দিয়ে সেখানে তৈরি করা হয়েছে এই বিলাসবহুল রিসর্টটি । এটি সাজিয়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন দুর্লভ প্রাচীন সামগ্রী দিয়ে ।

বিলাসবহুল রিসর্টের অন্দরমহল

রিসর্টে শোয়ার ঘর থেকে ব্যালকনি অথবা ডাইনিং রুম, বলরুমে কিংবা রেস্তরাঁ যেখানেই আপনি যান না কেন, হাত দিয়ে ছুতে পারবেন চা গাছ । শুধু সাজানোর জন্য ব্যবহার হয়নি এগুলি । রোজ সকালে চা বাগানের অংশহিসেবে এখানে নিয়মিত পরিচর্যা করা হয় চা গাছগুলির । তোলা হয় চা পাতা । বস্তুত যে পর্যটকেরা এখানে আসবেন তাঁদের চা তৈরির যাবতীয় পদ্ধতি ঘুরিয়ে দেখানোই হবে বাড়তি আকর্ষণ । চায়ের সঙ্গে সম্পর্কিত নানা সামগ্রী সাজিয়ে তোলা হয়েছে এই রিসর্টে ।

শিলিগুড়িতে তৈরি হচ্ছে টি টুরিজ়ম রিসর্ট

এখানে সাজিয়ে তোলা হয়েছে উত্তরবঙ্গে চা চাষের ইতিহাস । দেশ-বিদেশের বিভিন্ন নিলাম ঘর থেকে নানা পুরাতন সামগ্রী নিয়ে এসে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তুলে পর্যটকদের মনোরঞ্জনের বন্দোবস্ত করেছে রিসর্ট কর্তৃপক্ষ । দার্জিলিং, কালিম্পং এবং সিকিমে আগে থেকেই বিলাসবহুল রিসর্ট রয়েছে এই সংস্থার । এসব জায়গায় আসতে হলে শিলিগুড়ি হয়েই আসতে হয় । কিন্তু শিলিগুড়িতে তাদের কোনও রিসর্ট ছিল না ।

ঢেলে সাজানো হয়েছে শোয়ার ঘর

পর্যটনকে উৎসাহ দিতে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হওয়ার পর শিলিগুড়িতে এমন ধরনের রিসর্ট করার ভাবনা চিন্তা মাথায় আসে সংস্থার । বছর দুয়েক আগে শুরু হয় কাজ । ইতিমধ্যেই প্রায় 90 শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে । কোরোনার জেরে কাজ সম্পন্ন হয়নি এখনও । রিসর্ট আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না হলেও বিপণন এবং প্রচারের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই রিসর্টের একটি অংশ খুলে দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের জন্য । দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে আসছেন পর্যটকেরা । রিসর্টের আধিকারিকদের দাবি, শুধু 200 কোটি টাকা বিনিয়োগ নয়, এর পাশাপাশি জোর দেওয়া হয়েছে স্থানীয় স্তরে বাসিন্দাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়োগের কাজেও । এর পাশাপাশি জোর দেওয়া হচ্ছে স্থানীয় সংস্কৃতি ও খাদ্যাভ্যাসকে তুলে ধরার।

চা বাগানের ঘেরাটোপে রিসর্ট
রিসর্ট কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, পর্যটকদের অত্যাধুনিক এবং বিলাসবহুল রিসর্টে রাখার পাশাপাশি সংলগ্ন চা বাগান ঘুরিয়ে দেখানোর বন্দোবস্ত করা হচ্ছে । আসন্ন দুর্গাপুজা-সহ বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে বেশকিছু ফুড ফেস্টিভালের আয়োজন করার চেষ্টা চলছে ।
সবুজ কার্পেটের উপর জলখাবারের ব্যবস্থা

পর্যটনে উৎসাহ দিতে শিলিগুড়ির কাছে গজলডোবায় রাজ্য সরকার প্রায় 300 কোটি টাকা খরচ করে গড়ে তুলেছে ভোরের আলো প্রকল্প । সেই প্রকল্পের উদ্বোধনের পর আরও কয়েকটি পর্যায়ের কাজ জোরকদমে চলছে । এর পাশাপাশি দাগাপুরের কাছে এই রিসর্ট তৈরি হওয়ায় খুশি রাজ্য সরকার । পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়েছেন, "আমরা রাজ্যে পর্যটনে উৎসাহ দিতে চাইছি । তাই চা বাগান গুলিকে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে কয়েক একর জমির উপর পর্যটনের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে অনুমতি দিয়েছি । একটি বড় হোটেল সংস্থা শিলিগুড়ি কাছে এই রিসর্ট করতে প্রায় 200 কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে । এর জেরে স্থানীয় অর্থনীতির যেমন উন্নত হবে, তেমনি কাজ পাবেন এলাকার বহু মানুষ । এভাবে আরও অন্যান্য সংস্থাগুলি এগিয়ে এলে একদিকে যেমন পর্যটনের বিস্তার ঘটবে তেমনি এলাকায় আর্থসামাজিক পরিকাঠামো আরও বৃদ্ধি পাবে ।"

পর্যটকদের টানতে রিসর্টে রাখা হয়েছে 1928 সালের ফোর্ড গাড়ি

ABOUT THE AUTHOR

...view details