দার্জিলিং, 16 মে : চৌরাস্তায় নয়, সিংমারি দলীয় কার্যালয়েই রিলে অনশন শুরু করল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার যুব সংগঠন (GJYM Relay Hunger Strike for Demanding Implementation of GTA Agreement) ৷ ঘোষণা মত সোমবার সকাল থেকেই অনশন শুরু করে যুব মোর্চার পাঁচ নেতা ৷ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সূত্রে জানা গিয়েছে, জিজেএম এর অর্গানাইজিং সেক্রেটারি দ্বীপেন মালে, যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক নোমেন রাই এবং টাউন কমিটির উদয় ছেত্রী, বিজয় মঙ্গর ও প্রতীক রাই এ দিন থেকে রিলে অনশন শুরু করেছেন ৷ মঙ্গলবার আবার জিজেএম এর অন্য পাঁচজন অনশনে বসবেন ৷
পুরো পরিস্থিতি দু’দিন পর্যবেক্ষণ করার পর অনশনে বসবেন বিমল গুরুং নিজে ৷ এ দিন ওই পাঁচ অনশনকারীদের শুভেচ্ছা জানান গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি ৷ তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘আমরা বুদ্ধ পূর্ণিমার কারণে চৌরাস্তায় অনশন কর্মসূচির অনুমতি পাইনি ৷ সেজন্য দলীয় কার্যালয়েই যুব মোর্চার প্রতিনিধিরা রিলে অনশন শুরু করল ৷ এর পর বিমল গুরুং নিজেও বসবেন ৷ আমরা স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানও চাইনি ৷ আমরা চেয়েছি 2011 সালে জিটিএ চুক্তি অনুযায়ী 356টি মৌজাকে জিটি’র অন্তর্ভুক্ত করা ও যেসব সরকারি বিভাগগুলি রয়েছে সেগুলো দ্রুত হস্তান্তর ৷ সেই সঙ্গে 11টি গোর্খা জনজাতিকে তপসিলি উপজাতির স্বীকৃতি দেওয়া ৷ আমরা চাই দ্রুত জিটিএ চুক্তি অনুযায়ী এই কাজগুলো হোক ৷’’
রাজনৈতিকমহলের মতে, পাহাড় ছেড়ে যাওয়ার আগে ও পাহাড়ে ফেরার পর বিমল গুরুংয়ের রাজনৈতিক প্রভাব ও সাংগঠনিক শক্তি অনেকটাই লোপ পেয়েছিল ৷ আর তার ফল বিধানসভা এবং পৌরসভা নির্বাচনে মিলিয়ে গিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ৷ এ দিকে নতুন পাহাড় ও নতুন চিন্তাধারাকে সামনে রেখে লড়াইয়ে নেমেছে অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ৷ পাহাড়কে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিকাঠামোয় আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য রেখে ময়দানে নেমেছে অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি ৷ যে কারণে পৌরসভা নির্বাচনে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে দার্জিলিং পৌরসভা দখল করেছেন অজয়রা ৷
জিটিএ চুক্তি কার্যকর করার দাবিতে সিংমারিতে রিলে অনশনে জিজেএম আরও পড়ুন : Darjeeling political parties on GTA Election: জুনেই জিটিএ নির্বাচনের প্রস্তাব রাজ্যের, দ্বিধাবিভক্ত পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলি
কিন্তু, পাহাড়ে ফেরার পর বিমল গুরুং এমন কোন ইস্যু পাচ্ছিলেন না, যেটাকে সামনে রেখে তিনি ফের নিজের আগের রাজনৈতিক ক্ষমতা বা হারানো মাটি ফিরে পান ৷ কারণ, স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান নিয়ে জিএনএলএফ আগে থেকে লড়ে আসছে ৷ সেই কারণে এ বার জিটিএ চুক্তিকে হাতিয়ার করেই ময়দানে বিমল-রোশন জুটি ৷ স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের উপর একদম জোর না দিয়ে, রাজ্যের ক্ষমতায় থাকা দাবি সমূহকে সামনে রেখে লড়াইয়ে নেমেছেন বিমল গুরুং ৷ এমনকি এক্ষেত্রে বিমলের দাবি মানতেও কোন অসুবিধা হবে না রাজ্যের ৷ কারণ আজ বাদে কাল জিটিএ চুক্তি অনুযায়ী সেসব করতেই হবে ৷ আর এগুলি নিয়ে বিমল গুরুংয়ের অনশন করার অর্থ, নিজের হারানো মাটি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা ৷ অন্যদিকে, পরবর্তীতে দাবি মানলে পাহাড়বাসীর কাছে রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তিও অনেকটা ভাল হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিকমহল ৷