দার্জিলিং, 2 সেপ্টেম্বর: মর্মান্তিক ! স্কুলের ইউনিফর্ম পরেই আত্মঘাতী নবম শ্রেণির পড়ুয়া ৷ অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে র্যাফল টিকিট (লটারি) বিক্রি করার জন্য প্রতিনিয়ত উপর চাপ দিচ্ছিল ৷ সেই মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরেই বছর 16-র ওই কিশোর আত্মঘাতী হয়েছে ৷ ঘটনাটি ঘটেছে দার্জিলিংয়ে ৷ ওই পড়ুয়া সেখানকার একটি স্কুলে পড়ত ৷ এই ঘটনায় মূল অভিযোগ প্রধান শিক্ষক গগেন্দ্র গুরুংয়ের বিরুদ্ধে ৷ ছাত্রের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দার্জিলিং সদর থানার পুলিশ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে ৷
এই ঘটনার পর ক্ষোভে প্রথমে স্কুলে ও পরে দার্জিলিং থানায় বিক্ষোভ দেখায় মৃত ছাত্রের পরিবার ও স্থানীয়রা । ঘটনার পরই স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মৃত ছাত্রের পরিবার । তবে গোটা ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন থেকে শিক্ষা দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । যাদবপুরে কলেজ পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনার পর দার্জিলিংয়ে স্কুল ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনায় যথেষ্ট উদ্বিগ্ন শিক্ষামহল ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্র দার্জিলিং সদর এলাকার রাজবাড়ির এলাকার একটি সরকারি স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র ছিল । সে দার্জিলিংয়ের প্রগতি গ্রামের পিবি গুরুং রোডের বাসিন্দা । গরিব শ্রমিক পরিবারের সন্তান ৷ অগস্ট মাসের মাঝামাঝি স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে পড়ুয়াদের চার পাতা করে র্যাফল টিকিট বিক্রি করতে দেওয়া হয় । ওই পড়ুয়া চার পাতার মধ্যে দু'পাতা সেই র্যাফেল টিকিট বিক্রি করতে সক্ষম হয় । দু'পাতা র্যাফল টিকিট বিক্রি করার পর 800 টাকা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় পড়ুয়া ।
অভিযোগ, সংগৃহীত টাকা ও বাকি থাকা টিকিটের পাতা স্কুলে জমা দিতে যায় সে । কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ টাকা নিলেও কোনোভাবেই বাকি টিকিট ফেরত নেয় না । উলটে তাকে বাকি দু'পাতা র্যাফল টিকিট বিক্রি করতে প্রতিনিয়ত চাপ দিতে শুরু করে । টিকিট বিক্রি করতে না পারায় প্রতিদিন স্কুলে পড়ুয়াকে গোটা ক্লাসের সামনে কটূক্তি, অপমান ও নির্যাতন করা হতো । শুধু তাই নয় । প্রতিদিন স্কুল থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছিল । শুক্রবারও টিকিট বিক্রি করতে না পারায় ওই পড়ুয়াকে অপমান করে স্কুল থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ।