দার্জিলিং, 14 মার্চ: একদিকে রাজ্যের 29টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ খারিজ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট ৷ আর অন্যদিকে, উপাচার্য নিয়োগ না-হওয়ায় এক প্রকার মুখ থুবড়ে পড়েছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ব্যবস্থাপনা (Deadlock Situations in Absence of Vice-Chancellor) ৷ দীর্ঘ কয়েকমাস ধরে অভিভাবকহীন অবস্থায় রয়েছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ৷ নেই উপাচার্য, নেই রেজিস্ট্রার ৷ এমনকি নেই ফিন্যান্স অফিসারের মতো অত্যাবশ্যকীয় আধিকারিক ৷ ফলে প্রতিদিনকার প্রশাসনিক কাজ থমকে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৷ সম্পূর্ণ দায়ভার সামলে চলেছেন যুগ্ম-রেজিস্ট্রার ৷ কিন্তু তাঁরও যে ক্ষমতা সীমিত ৷ এই অবস্থায় বিপাকে পরেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৷ তাদের কাতর আবেদন দ্রুত উপাচার্য, রেজিস্ট্রার এবং ফিন্যান্স অফিসার নিয়োগ করা হোক ৷ তা না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কাজ থমকে যাবে ৷
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্রর মেয়াদ শেষ হয়েছে গত 25 জানুয়ারি ৷ শেষ ভারপ্রাপ্ত ফিনান্স অফিসার সুখেন্দ্র নারায়ণ সাহা 25 ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কাজ করে অবসর নিয়েছেন ৷ অন্যদিকে, 28 ফেব্রুয়ারি থেকে নেই কোন রেজিস্ট্রার বা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ৷ শেষ ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ছিলেন নুপুর বিশ্বাস ৷ এখন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে ওই তিন আধিকারিক না থাকায় ব্যাপক সমস্যায় পড়েছে কর্তৃপক্ষ ৷
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন উত্তরবঙ্গের আটটি জেলায় 49টি কলেজ রয়েছে ৷ সেই সঙ্গে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্যাম্পাস ৷ সেইসব জায়গার সমস্ত কাজ থমকে রয়েছে ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় 250 জন স্থায়ী ও প্রায় 450 অস্থায়ী কর্মীদের বেতন, কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড তিনমাস ধরে আটকে রয়েছে ৷ সব থেকে বেশি বিপাকে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল আবাসিকরা ৷ কারণ অর্থ অনুমোদনের জন্য উপাচার্য এবং ফিন্যান্স অফিসার না থাকায়, হস্টেল আবাসিকদের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ করা যাচ্ছে না ৷
যা জানা গিয়েছে, 15 মার্চ পর্যন্ত আবাসিকদের খাবার মজুত ছিল ৷ ফলে টাকা না মেলায় বৃহস্পতিবার থেকে আবাসিকরা কীভাবে খাবার পাবেন, তা নিয়ে চিন্তায় কর্তৃপক্ষ ৷ পাশাপাশি তেলের টাকা না মেলায়, বন্ধ করা হয়েছে বেশ কয়েকটি বাস পরিষেবাও ৷ বন্ধ রয়েছে কর্মীদের বদলি, লোক নিয়োগের মতো কাজও ৷ ফলে দ্রুত সেই সমস্যার সমাধান না করলে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিত্যদিনের কাজ ৷ পেরিয়ে গিয়েছে বিদ্যুতের বিল জমা দেওয়ার শেষ তারিখও ৷ বকেয়া রয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা ৷ ফলে যে কোনও মুহুর্তে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হতে পারে ৷ এমনই সংকটের মধ্যে রয়েছে রাজ্যের অন্যতম এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৷