বালুরঘাট, 17 নভেম্বর : দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতিগুলি নিজেদের দখলে নিতে অনেকদিনই ধরেই চেষ্টা চালাচ্ছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব । কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল পঞ্চায়েত আইন । তাই 12 নভেম্বর মেয়াদ শেষ হতেই স্থায়ী সমিতিগুলির দখল নিতে জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে শাসকদল । সেই মর্মে আগামীকাল BJP-র হাতে থাকা স্থায়ী সমিতিগুলিতে অনাস্থা আনতে চলেছে তৃণমূল । আগামীকালই মালদা ডিভিশন কমিশনারকে চিঠি দিয়ে অনাস্থার আবেদন জানানো হবে । সেইমতো শুক্রবার কর্মাধ্যক্ষদের নিয়ে যাবতীয় কাজ শেষ করে ফেলা হয়েছে ।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদে 18 সদস্য নিয়ে বোর্ড গঠন করেছিল তৃণমূল । চলতি বছরের 24 জুন প্রাক্তন তৃণমূল জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রর হাত ধরে দিল্লিতে গিয়ে BJP-তে যোগদান করেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের 10 জন তৃণমূল সদস্য । 11 জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা পরিষদের দখল নেয় BJP । BJP-তে যোগ দেওয়া জেলা পরিষদের তিন সদস্য 13 জুলাই ফের তৃণমূলে ফিরে যান । পরে আরও দু'জন তৃণমূলে ফিরে আসেন । ফলে তৃণমূলের দখলে আসে 13টি আসন । কিন্তু কৃষি ও সেচ, মৎস্য ও প্রাণী এবং পূর্ত দপ্তরের মতো স্থায়ী সমিতিগুলিতে BJP-র দখল থাকায় কিছুই করতে পারছিলেন না সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূল । এই সময় তৃণমূল অভিযোগ তোলে, স্থায়ী সমিতিগুলিতে BJP-র দখল থাকায় তারা কোনওরকম উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারছে না । তৃণমূলের বিরুদ্ধে এই একই অভিযোগ তোলে BJP । দুই রাজনৈতিক দলের দোষারোপে কার্যত শিকেয় ওঠে জেলা পরিষদের কাজকর্ম । রাজ্য সরকারেরে বরাদ্দ থেকেও বঞ্চিত হয় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ ।
এই অবস্থায় জেলা পরিষদের দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে তৃণমূল । অনাস্থা আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । কিন্তু পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী সভাধিপতির বিরুদ্ধে আড়াই বছরের আগে অনাস্থা আনা যায় না । তাই সভাধিপতিকে সরাতে পারছে না তৃণমূল । তবে, BJP-দখলে থাকা স্থায়ী সমিতিগুলিতে নিজেদের কর্মাধ্যক্ষ বহাল করতে তৎপর হয় শাসকদল । 12 নভেম্বর স্থায়ী সমিতিগুলির কর্মাধ্যক্ষের এক বছর পূর্ণ হয়েছে । তাই পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে কোনও বাধা নেই । ফলে স্থায়ী সমিতিগুলি থেকে BJP-র কর্মাধ্যক্ষদের সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে চিঠি পাঠানো হয় শুক্রবার । শুরু হয় অনাস্থার যাবতীয় প্রক্রিয়া ।