বালুরঘাট, 14 সেপ্টেম্বর : প্রত্যেক বছরের ন্যায় এবারেও ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বালুরঘাট দিবস উদযাপন করা হল । আজ বালুরঘাটের ডাঙ্গিতে থাকা '42-এর আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতিসৌধে ফুল মালা দিয়ে ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে যথাযথ মর্যাদায় শ্রদ্ধা জানানো হল । জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত । ডাঙ্গির পর বালুরঘাট প্রশাসনিক ভবন চত্বরেও দিনটি উদযাপন করা হয় । প্রশাসনিক ভবন চত্বরে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলা শাসক নিখিল নির্মল । এছাড়াও হাজির ছিলেন জেলা তথ্য ও সাংস্কৃতিক আধিকারিক শান্তনু চক্রবর্তী, বালুরঘাট দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি পীযুষ দেব, সম্পাদক সুভাষ চাকি, বিপ্লব খাঁ, পৌর প্রশাসক শঙ্কর চক্রবর্তী সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনরা।
1942 সালে 14 সেপ্টেম্বর স্বাধীন হয়েছিল বালুরঘাট , পালিত হয় আজও
বালুরঘাটবাসীর কাছে 14 সেপ্টেম্বর মানে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ঐতিহাসিক স্মৃতি । সেদিনটি স্মরণ করে আজও সমমর্যাদায় পালিত হয় বালুরঘাট দিবস । প্রতি বছর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এদিনটি সম মর্যাদায় পালন করা হয় ।
দেশকে পরাধীনতার বন্ধন থেকে মুক্ত করতে ভারতবর্ষে যতগুলি আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল 1942 সালের এই ভারত ছাড়ো আন্দোলন । আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়ে বালুরঘাটেও। মহাত্মা গান্ধির ডাকে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বালুরঘাটের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা । বালুরঘাটের বাসিন্দা স্বাধীনতা সংগ্রামী সরোজ রঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বালুরঘাট শহরের উপকণ্ঠে ডাঙ্গি গ্রামে হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হন আগের দিন রাতে । 14 সেপ্টেম্বর তারা বালুরঘাটে এসে শহর অবরুদ্ধ করে দেয় । আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় আদালত, পোস্ট অফিস, প্রশাসনিক ভবনে। লুঠপাঠ চলে সমস্ত সরকারি অফিসে। তৎকালীন প্রশাসনিক ভবন বর্তমানে ট্রেজারি বিল্ডিং থেকে ব্রিটিশ ইউনিয়ন জ্যাক পতাকা নামিয়ে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। ভয়ে পালিয়ে যান ব্রিটিশ কর্তারা । বালুরঘাটবাসী পেয়েছিল স্বাধীনতার স্বাদ । দুই দিন স্বাধীন থাকার পর ফের ব্রিটিশ সেনা ফিরে এসে পুনরায় দখল নেয় বালুরঘাটের। চলে ধরপাকড়, অত্যাচার ।
সেদিনটি স্মরণ করে আজও 14 সেপ্টেম্বর সমমর্যাদায় পালিত হয় বালুরঘাট দিবস । প্রতি বছর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এদিনটি সম মর্যাদায় পালন করা হয় । এদিন বালুরঘাট শহরের আত্রেয়ী নদী সংলগ্ন ডাঙ্গীর শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। যদিও এবার কোরোনা ও লকডাউনের জন্য র্যালি করা হয়নি । সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।