বালুরঘাট, ১৮ মার্চ: মা শেষ বারের মত কথা বলে নিই। আর তো কথা হবে না। মায়ের সাথে কথা হওয়ার পরই বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হল যুবতি। মৃত যুবতীর নাম দিশা সাহা(১৮)। বাড়ি বালুরঘাট শহরের সাহেবকাছারী এলাকায়। বুধবার দুপুরে বিষয়টি নজরে আসতেই পরিবারের লোক তাকে তড়িঘড়ি বালুরঘাট হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ দিশার স্বামীর জন্যই তাদের মেয়ে মারা গিয়েছে। এদিকে পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে বালুরঘাট থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিশা সাহার মাসখানেক আগেই বিয়ে হয় খাসপুরের দীপঙ্কর সাহার সঙ্গে। তারা পালিয়ে বোল্লা কালী মন্দিরে বিয়ে করেছিল। তবে বিয়ের পর থেকেই দিশা তার বাবার বাড়িতেই থাকত। পালিয়ে বিয়ে করা ছেলের পরিবার তা মেনে নিতে চায়নি। অবশেষে দুই পরিবার বিয়ের জন্য রাজিও হয়েছিল। সামনের বৈশাখ মাসে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। অভিযোগ, গত সোমবার দীপঙ্কর দিশাকে বলে সে তার মার কথার অবাধ্য হতে পারবে না। তাই সে যেন অন্য কোথাও বিয়ে করে। আর এতেই ভেঙ্গে পড়েছিল দিশা। বিয়ের পর যদি অন্য কাউকে আবার বিয়ে করতে হয় তাহলে সে সবার হাসির খোরাক হয়ে যাবে। এমনিতেই বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ি না গিয়ে বাপের বাড়ি থাকে। এর জন্য তাকে উঠতে-বসতে কথা শুনতে হত। লজ্জার ভয়ে এদিন দুপুরে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় দিশা।
মায়ের সঙ্গে কথা শেষ হতেই আত্মঘাতী যুবতি
মা শেষ বারের মত কথা বলে নিই। আর তো কথা হবে না। মায়ের সাথে কথা হওয়ার পরই বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হল যুবতি ।
পরিবারের বিষয়টি নজরে আসলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। বিষয়টি জানতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়ে দিশার মা ও বাবা। এই ঘটনায় অভিযুক্ত দীপঙ্কর সাহার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে চলেছেন মৃতার পরিবার। পাশাপাশি এই ঘটনায় যারা যুক্ত রয়েছে তাদের সকলের কঠিনতম শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। এবিষয়ে দিশার মা দীপা সাহা জানান, মাস তিনেক আগে তাদের মন্দিরে বিয়ে হয়েছিল। মেয়েকে বলেছিলেন সামনের বৈশাখে ধুমধাম করে বিয়ে দেবেন। সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। হঠাৎ করে গত সোমবার রাতে অভিযুক্ত যুবক দীপঙ্কর সাহা তার মেয়েকে ফোন করে বলে, অন্য কোথাও যেন তার মেয়ে বিয়ে করে। সে তার মায়ের অবাধ্য হতে পারবে না। এমন কথাতেই তার মেয়ে আঘাত পায়। তিন মাস ধরে বিয়ে করার পর অন্য কাউকে বিয়ে, এটা মেনে নিতে পারেনি। তাই বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ওই ছেলের জন্যই তার মেয়ে আজ মারা গেছে। তার কঠিনতম শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। যদিও এই বিষয়ে অভিযোগ ওঠা দীপঙ্কর সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।