বংশীহারী, 10 এপ্রিল :বুনিয়াদপুর পৌরসভার 1নং ওয়ার্ডের ভুঞ্জা পাড়াতে প্রচুর দুস্থ এবং গরিব পরিবারদের বাস । সারা বছরই ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চলে তাঁদের । এখানে প্রায় এইরকম 50টি পরিবার বসবাস করে । কোরোনার সংক্রমণ রোধে এখন দেশে তথা রাজ্যে জারি রয়েছে লকডাউন । রাস্তাঘাটেও অকারণে বেরোনোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে । বেশিরভাগ মন্দির, মসজ়িদও বন্ধ । রাস্তাঘাটও ফাঁকা । নিষেধাজ্ঞা জারি থাকার কারণে বাইরেও বেরোতে পারছেন না এই পরিবারগুলোর সদস্যরা । লকডাউনের এই সময় ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবারে খাবার জোগানো কার্যত প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে । বুনিয়াদপুর পৌরসভা এবং মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় সরকারি সাহায্য পৌঁছালেও তাঁদের কাছে এখনও পর্যন্ত কোনও সাহায্য এসে পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ । ফলত সমস্যায় পড়তে হয়েছে এই সমস্ত পরিবারগুলিকে ।
বন্ধ ভিক্ষাবৃত্তি, রাজ্য প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে 50 পরিবার
বুনিয়াদপুর এলাকায় ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চলে প্রচুর মানুষের । লকডাউনের কারণে এখন বন্ধ ভিক্ষাবৃত্তি । খাবার জুটছে না । প্রশাসনের তরফেও কোনও সাহায্য মিলছে না বলে অভিযোগ ।
এলাকার মানুষের অভিযোগ, মহকুমা প্রশাসন এবং বুনিয়াদপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত তাঁদের জন্য কোনওরকম সরকারি সাহায্য আসেনি । বেশিরভাগ দিনই একবেলা শাকপাতা খেয়ে থাকতে হচ্ছে । আর একবেলা অভুক্ত । এই বিষয়ে এলাকার এক বাসিন্দা সিটকু ভুঞ্জার জানান, "আমি সারা বছরই ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালাই । কিন্তু এখন লকডাউনের জন্য আমাদের ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ হয়ে গিয়েছে । আমাদের বেশিরভাগ দিন না খেয়ে থাকতে হচ্ছে । আমরা রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া রেশনের 2 কেজি চাল পেয়েছি । কিন্তু তা দিয়ে তো আর সারা মাস চলে না । তাই সেই চালও আমরা খুব মেপে মেপে খাচ্ছি যাতে তাড়াতাড়ি শেষ না হয়ে যায় । এখানে বেশিরভাগ মানুষই ঠিকভাবে খেতে পাচ্ছেন না । সরকারি সাহায্য থেকেও আমরা বঞ্চিত । আমরা চাই বুনিয়াদপুর পৌরসভা কিংবা মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হোক ।"
রূপচাঁদ ভুঞ্জার নামে এক বয়স্ক বৃদ্ধ জানান, "আমি অনেকদিন থেকেই ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালাচ্ছি । আমাদের এখানে প্রায় 50টা পরিবার ভিক্ষাবৃত্তি করেই সংসার চালায় । কিন্তু লকডাউনের জন্য আমাদের সেই পেশা বন্ধ হয়ে গিয়েছে । বাড়িতে বসে থেকে আমাদের সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়েছে । আমরা সরকারি সাহায্য চাই । বুনিয়াদপুর পৌরসভা কিংবা মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একবারের জন্যও আমাদের সরকারি সাহায্য করা হয়নি । " এই বিষয়ে গঙ্গারামপুরের মহকুমা শাসক মানবেন্দ্র দেবনাথ জানান, "আমার কাছে খবর ছিল না যে ভুঞ্জার পাড়াতে বেশিরভাগ মানুষ খেতে পাচ্ছেন না । আমি খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি যেন ওই সমস্ত পরিবারগুলি সরকারি সাহায্য থেকে বঞ্চিত না হন ।"