গঙ্গারামপুর, 14 ডিসেম্বর: ঘুষের টাকার জন্য পুলিশের চাপে আত্মঘাতী হলেন ব্যবসায়ী(Businessman Died by Suicide)৷ ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে তাঁর ঝুলন্ত দেহ । বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে গঙ্গারামপুর থানার নন্দনপুর গ্রামে । মৃতের নাম কর্ণেল কিস্কু (33)। ফরাক্কায় তাঁদের আরেকটি বাড়ি রয়েছে । তাঁর বাবা শিক্ষক ও মা নার্স ৷
এলআইসি সংক্রান্ত বিষয়ে মঙ্গলবার ফরাক্কার বাড়িতে যান কর্নেল । রাতে সেখান থেকে নন্দনপুরে গ্রামের বাড়িতে ফেরেন । ঠ্যাঙাপাড়ায় পৌঁছতেই পুলিশ তাঁকে আটক করে । তবে রাতেই আবার তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে দাবি । এরপর বাড়ি ফিরে কর্নেল নিজের ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন বলে অভিযোগ । বুধবার সকালে তাঁর দেহ উদ্ধার হয় ।
এদিকে, এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন পরিবার-সহ গ্রামবাসীরা । ঘটনাস্থলে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ এলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা । দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান । তাঁদের অভিযোগ, কর্নেলকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ তাকে টাকার জন্য চাপ দেয় । তা সহ্য করতে না পেরেই আত্মঘাতী হন ।
বেলা গড়াতেই উত্তেজনা বাড়তে থাকায় ঘটনাস্থলে আসেন গঙ্গারামপুর থানার আইসি শান্তনু মিত্রের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী । মোতায়েন করা হয় ব়্যাফও । আসেন গঙ্গারামপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য ও বিজেপি বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায় । বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য ।
আরও পড়ুন :আবাস যোজনায় অনিয়ম করতে চাপ দেওয়ায় আত্মঘাতী আইসিডিএস কর্মী ? তপ্ত স্বরূপনগর
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত্রে ফরাক্কা থেকে গঙ্গারামপুরের বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় অস্বাভাবিকভাবে ঘোরাঘুরি করায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে কর্নেলকে আটক করে । তাঁকে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার কথা জানায় পুলিশ ৷ তবে কিছু টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার পর পরবর্তীতে অতিরিক্ত টাকার চাপ দেয় পুলিশ ৷ তার জেরেই আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা ৷
এই বিষয়ে মৃতের আত্মীয় স্বর্ণলতা মুর্মু জানান, এলআইসি সংক্রান্ত বিষয়ে মঙ্গলবার ফরাক্কার বাড়িতে ফেরে কর্নেল । রাতে সেখান থেকে নন্দনপুর গ্রামের বাড়িতে ফেরার সময় ঠ্যাঙাপাড়ায় পৌঁছতে পুলিশ তাঁকে আটক করে । রাতেই আবার তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় । এরপর বাড়ি ফিরে কর্নেল নিজের ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় । ওই পুলিশকর্মীর উপযুক্ত শাস্তি চাই ।
গঙ্গারামপুর বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক সত্যেন রায়ের কথায়,"মঙ্গলবার রাতে নিজের কাজে বাড়ি আসছিল কর্নেল ৷ মাঝপথে পুলিশ তাকে আটক করে টাকার জন্য চাপ দেয় । প্রথম অবস্থায় প্রায় 72 হাজার টাকা দিলেও পরবর্তীতে আরও পঞ্চাশ হাজার টাকা দেবার কথা বলে পুলিশ । টাকার চাপ দেওয়ার কারণেই কর্নেল নিজের ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় । ওই পুলিশ কর্মীর কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি ৷"
এই বিষয়ে গঙ্গারামপুর মহকুমার পুলিশ আধিকারিক দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, তদন্ত চলছে ৷ খুব তাড়াতাড়ি ওই পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হবে ।
আরও পড়ুন :শিলিগুড়িতে শাড়ি পরে সেজেগুজে আত্মহত্যা ছাত্রের