বালুরঘাট, ১৫ নভেম্বর : রাস পূর্ণিমার পর প্রথম শুক্রবার রাতে বালুরঘাট থানার বোল্লা এলাকায় বোল্লা রক্ষাকালী মাতার পূজা অনুষ্ঠিত হতে চলছে । এইদিন রাতে পুজো হবে বোল্লা রক্ষা কালীর । প্রায় কয়েকশো বছর আগে থেকে এই বোল্লা রক্ষাকালী মাতার পুজো হয়ে আসছে বলে পুজো কমিটি জানায় । দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বাইরেও দেশে ও বাংলাদেশও জনপ্রিয় এই পুজো ৷ লাখ লাখ ভক্তের সমাগম হয় । আয়োজন হয় একটি মেলারও ।
প্রায় 400 বছরের বেশি পুরোনো এই মেলা প্রতি বছর রাসপূর্ণিমার পরের শুক্রবার থেকে শুরু হয় । হিন্দু-মুসলিম সব ধর্মের মানুষের সমাগমে প্রতি বছর তা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মহামিলন ক্ষেত্রে পরিণত হয় । মেলায় প্রতিবছর দশ লাখের বেশি মানুষের সমাগম হয় । প্রতি বছরের মত এবছরও মেলায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রায় 2.5 হাজার উর্দিধারী, সাদা পোশাকের পুলিশ ও সিভিক ভলেন্টিয়ার, সিভিল ডিফেন্স, CCTV-র ব্যবস্থা করেছে জেলা পুলিশ প্রশাসন । নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে গোটা মেলা জুড়ে বেশ কয়েকটি ওয়াচ টাওয়ার বসানো হচ্ছে । এমনকি মেলা প্রাঙ্গনে 24 ঘন্টার জন্য খোলা হয়েছে পুলিশ কন্ট্রোল রুম । হিন্দু মুসলিম দুই ধর্মের পবিত্র দুটি স্থান পাশাপাশি অবস্থানের এই নজিরকে সম্মান দিয়ে কবরস্থানের নাম রাখা হয়েছে “সম্প্রীতি”৷
জেলায় জনশ্রুতি রয়েছে, আগে এই এলাকার জমিদার ছিলেন বল্লভ মুখোপাধ্যায় ৷ তাঁর নাম অনুসারেই জায়গাটির নাম হয়েছে বোল্লা । আজ থেকে কয়েকশ বছর আগে এলাকারই এক মহিলা স্বপ্নাদেশে কালো একটি পাথরখণ্ড কুড়িয়ে পেয়ে সেটিকে প্রথম মাতৃরূপে পুজো শুরু করেছিলেন। বিভিন্ন নথিপত্রে ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলেও এই বোল্লা কালীর পূজার উল্লেখ পাওয়া যায় । যা থেকে খুব সহজেই এই মেলার বয়স 300 বছরেরও বেশি বলে জানা যায় । এবছরও মেলায় মণিহারির দোকান থেকে শুরু করে নাগরদোলা, সার্কাস ও যাত্রা সহ বিনোদন মূলক অনেক কিছুই রয়েছে । রাতে কালীপুজোর মানত হিসাবে কয়েক হাজার পাঁঠা বলির প্রচলন রয়েছে । মেলার নিরাপত্তা জোরদার করতে করা পুলিশি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে ৷ এবার সব মিলিয়ে 20 কেজির উপর সোনা ও রুপার গহনায় মা সজ্জিত হয়েছেন । শিলিগুড়ির এক ভক্ত মানত হিসেবে হিরে দান করেছেন ।