বালুরঘাট, 10 এপ্রিল: রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন কোনও সাম্প্রতিক ঘটনা নয় ৷ রাজনীতিতে বিষয়টি নতুনও নয় ৷ কিন্তু দল বদলের 'অপরাধে' আদিবাসী মহিলাদের দিয়ে দণ্ডি কাটানোর মতো মধ্যযুগীয় বর্বরতা জেলা রাজনীতিতে আমদানি করে এই মুহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত নাম দক্ষিণ দিনাজপুর মহিলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভানেত্রী প্রদীপ্তা চক্রবর্তী ৷ তিন আদিবাসী মহিলাকে দণ্ডি কাটিয়ে দলে ফের যোগদান করিয়ে বর্তমানে বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছেন তিনি ৷
প্রদীপ্তা চক্রবর্তীর এমন কাজ সমর্থন করেনি রাজ্যের শাসকদল ৷ ঘটনায় খুশি নন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ৷ তাঁর নির্দেশে রবিবারই প্রদীপ্তাকে জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এই ইস্যুতে যাতে আদিবাসী সমাজের কাছে ভুল বার্তা না যায়, তার জন্য ওই পদে নিয়ে আসা হয়েছে ওই সমাজেরই প্রতিনিধি স্নেহলতা হেমব্রমকে ৷
কিন্তু এই কাজ কেন করলেন প্রদীপ্তা ? এই রাজনীতির পিছনে কোন না জানা কাহিনি লুকিয়ে রয়েছে ? সেটাই জানার চেষ্টা করেছে ইটিভি ভারত ৷ মূল ঘটনাটি ঘটেছিল দক্ষিণ দিনাজপুরের আদিবাসী অধ্যুষিত তপন ব্লকে ৷ গত বৃহস্পতিবার ওই ব্লকের গোফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাদ সানকৈর গ্রামে একটি যোগদান কর্মসূচির আয়োজন করেছিল বিজেপি ৷ পদ্ম শিবিরের দাবি, ওই শিবিরে প্রায় 200 জন তৃণমূল কর্মী তাদের দলে যোগ দেন ৷
এরপরের রাতেই ঘটে সেই মধ্যযুগীয় বর্বরতা ৷ চার আদিবাসী মহিলাকে বালুরঘাট শহরে থাকা বিজেপি পার্টি অফিস থেকে শাসকদলের পার্টি অফিস পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা দণ্ডি কাটানো হয় ৷ তারপর তাঁদের ঘাসফুল শিবিরে ফিরিয়ে নেওয়া হয় ৷ এই ঘটনার নেতৃত্ব দেন রাজ্যের প্রাক্তন কারামন্ত্রী শংকর চক্রবর্তীর পুত্রবধূ প্রদীপ্তা চক্রবর্তী ৷ সেদিন তিনি ওই চার মহিলার তৃণমূলে পুনরায় যোগদানের জন্য নিজে কৃতিত্বও নেন ৷
এমন ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্যজুড়ে ৷ পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এই ঘটনা যে শাসকদলকে বেকায়দায় ফেলতে পারে তা বিলক্ষণ বুঝতে পারে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব ৷ তাই তড়িঘড়ি গঠিত হয় তদন্ত কমিটি ৷ সেই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তৃণমূলের তরফে জানানো হয় গোটা ঘটনার দায় প্রদীপ্তার ৷ তিনি দলের কোনও অনুমোদন না নিয়েই এই কর্মসূচি করেছিলেন ৷