বালুরঘাট, 25 জুলাই: ফের বাংলার জয়জয়কার ৷ ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারে (বার্ক) ডাক পেলেন বালুরঘাটের পড়ুয়া কৌস্তভ ঘোষ ৷ খুব শীঘ্র পরমাণু বিজ্ঞানী বা নিউক্লিয়ার সায়েন্টিস্ট হিসাবে কৌস্তভকে চিনবে সারা বিশ্ব ৷ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও বিজ্ঞানী এপিজে আবদুল কালামের আদর্শকে পাথেয় করে পরমাণু বিজ্ঞানী হওয়ার পথে এক ধাপ এগোলেন এই পড়ুয়া ৷
কৌস্তভ বলেন, "ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারে সায়েন্টিফিক অফিসার হিসাবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি ৷ তার আগে আমাকে এক বছরের প্রশিক্ষণ নিতে হবে ৷ এর জন্য আমাকে মুম্বইয়ে ইন্টারভিউ দিতে যেতে হয়েছিল ৷ 30 জুন সফল 21 জনের তালিকা প্রকাশিত হয় ৷ ওই তালিকায় আমার নামও রয়েছে ৷ প্রথমে আমাকে ইন্দিরা গান্ধি সেন্টার ফর অ্যাটমিক রিসার্চে এক বছরের প্রশিক্ষণ নিতে হবে ৷ তারপর সায়েন্টিফিক অফিসার হিসাবে আমি বার্কে কাজ করার সুযোগ পাব ৷ ছোট থেকে স্বপ্ন দেখতাম গেজেটেড অফিসার কিংবা বিজ্ঞানী হব ৷ বার্ক আমাকে দু'টি সুযোগই দিয়েছে ৷ আমি যে কোনও একটি বেছে নিতে পারি ৷ খুব ভালো লাগছে ৷ দেশের পরমাণু গবেষণায় কিছু করে যাওয়াই আমার লক্ষ্য ৷"
আরও পড়ুন:চন্দ্রযান-3 অভিযানের শরিক এক বাঙালি বিজ্ঞানী, ক্যামেরা ডিজাইনে ইসলামপুরের অনুজ
কৌস্তভের আদর্শ এপিজে আবদুল কালাম : প্রসঙ্গত, তামিলনাডুর রামেশ্বরমের নৌকার মালিক জইনুলাবেদিনের ছেলে যে একদিন পৃথিবীখ্যাত বিজ্ঞানী হয়ে উঠবেন, ভাবেননি ওই এলাকার মানুষজন ৷ সকলে জানত তাঁর ছেলে আবুল পাকির জাইনুলাবেদিন আবদুল কালাম লেখাপড়ায় খুব ভালো ৷ বড় হয়ে ভালো চাকরি করতে পারেন ৷ কিন্তু সেই ছেলের নাম যে একদিন গোটা বিশ্বের মুখে মুখে ঘুরবে, তা সকলের ভাবনার বাইরে ছিল ৷ সেই আবদুল কালামই অর্থাৎ দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিই আদর্শ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের কৌস্তভের ৷ ছোট থেকে তাঁর কথা শুনে, তাঁর ছবি দেখে বড় হয়েছেন তিনি ৷
অভাবের সংসারে বড় হয়ে ওঠেন কৌস্তভ: বাবা আগে দিনমজুরি করতেন ৷ তপনের একটি গ্রামে থাকতেন তাঁরা ৷ পড়াশোনায় ছেলের মনোযোগ দেখে গ্রামের বাড়ি বিক্রি করে চলে আসেন বালুরঘাট শহরের একপ্রান্তে ৷ প্রথমে ভাড়া বাড়িতে দিনযাপন ৷ নিজে চেয়েচিন্তে জুটিয়ে ফেলেন একটি সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি ৷ আর্থিক দুরাবস্থার সুনামি তাঁর উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে বারবার ৷ কিন্তু ছেলের গায়ে তার আঁচ পড়তে দেননি ৷ বাবা-মায়ের এই যুদ্ধ বিফলে যেতে দেননি কৌস্তভও ৷ আজ তিনি দেশের অন্যতম সেরা পরমাণু গবেষণাকেন্দ্রের বিজ্ঞানী হওয়ার পথে হাঁটা শুরু করেছেন ৷ আর হয়তো বছর খানেক ৷ তারপরেই নিউক্লিয়ার সায়েন্টিস্ট হিসাবে কৌস্তভকে চিনবেন সবাই ৷
আরও পড়ুন:ষষ্ঠ প্রয়াণ দিবসে কালামকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন