গঙ্গারামপুর, 1 মে: উত্তরের চার জেলা শেষে এবার দক্ষিণ দিনাজপুরে নব জোয়ার কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ কোচবিহার থেকে করণদিঘি পর্যন্ত তাঁর জনসংযোগ কর্মসূচি মানুষের মনে কী প্রভাব ফেলেছে, তা সঠিকভাবে বোঝা না-গেলেও বিভিন্ন জায়গায় তাঁর দলেরই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে ৷ রাজনৈতিক মহলের দাবি, সেই পরিস্থিতি ফের নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে রাজ্যের শাসকদলকে ৷ মুখে যাই বলুন, গ্রামে গ্রামে জনসংযোগ যাত্রায় প্রার্থী বাছাইয়ের ভোট ঘিরেই যা ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে দুশ্চিন্তা বেড়েছে অভিষেকেরও ৷ আর সেকারণেই কি ঘন ঘন বদলাচ্ছে তাঁর কর্মসূচি ? দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে তাঁর জনসভা স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে বলে খবর ৷ ফলে মঙ্গলবার তিনটির বদলে দক্ষিণ দিনাজপুরে দুটি জনসভা করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷
জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, প্রথমে হরিরামপুর, পরে পতিরামে জনসভা করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ রাতে গঙ্গারামপুর স্টেডিয়ামে দলের কিছু পদাধিকারীর সঙ্গে তিনি নির্বাচনী সভা করবেন বলে এখনও পর্যন্ত খবর ৷ কিন্তু গঙ্গারামপুরে অভিষেকের ঘোষিত সভা কেন বাতিল করা হল ? তৃণমূল সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে পঞ্চায়েতে প্রার্থী বাছাইকে ঘিরে যেভাবে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে, তা ঘাসফুল শিবিরের কাছে মোটেও স্বস্তিদায়ক নয় ৷ অভিষেকের সভা বাতিলের পিছনে নাকি সেই পুরনো গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই একমাত্র কারণ, বলছে জেলা নেতৃত্ব ৷ আর তা জানতে পেরেই নাকি তৃণমূল নেতা তড়িঘড়ি সভা বাতিলের কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন ৷
জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, গঙ্গারামপুরে দীর্ঘদিন ধরেই দল মূলত তিনটি গোষ্ঠীতে বিভক্ত ৷ তিন গোষ্ঠীর আবার তিন নেতা ৷ রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র, প্রাক্তন জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌতম দাস এবং দলের বর্তমান জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার এই তিন নেতার মধ্যেকার বিবাদ জেলায় সুপরিচিত ৷ তবে ইদানিং বিপ্লবের সঙ্গে গৌতমের ঘণিষ্টতা বেড়েছে বলেও দলের অন্দরে খবর ৷ এর পিঠনে অবশ্য অপর গোষ্ঠীর নেতার দেবি, বর্তমান জেলা সভাপতি মৃণাল সরকারকে কোনঠাসা করতেই হাত মিলিয়েছে যুযুধান দুই নেতা ৷ তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে এ বিষয়ে একাধিকবার রিপোর্ট গিয়েছিল দলের জেলা নেতৃত্বের তরফে ৷ মঙ্গলবার গঙ্গারামপুরের সভায় এই তিন গোষ্ঠীর বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসার বিপুল সম্ভাবনা ৷ একই সঙ্গে এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে দলের নীচুতলার নেতা-কর্মীদের ক্ষোভের বিস্ফোরণ হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে ৷