পাথরপ্রতিমা, 26 ডিসেম্বর: গত রবিবার রাতে সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমার উপেন্দ্রনগরে ঠাকুরান নদীর চরে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছিলেন গ্রামবাসীরা ৷ আজ সকালে সেই বাঘকে অবশেষ গভীর জঙ্গলে ফেরানো সম্ভব হল ৷ 36 ঘণ্টারও বেশি সময়ের চেষ্টায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে জঙ্গলের পথে রওনা করা গিয়েছে ৷ এর জন্য রীতিমতো কালঘাম ছুটেছে বনকর্মীদের ৷ দক্ষিণ 24 পরগনার বন দফতরের মুখ্য আধিকারিক মিলনকান্তি মণ্ডল জানিয়েছেন, বন কর্মীরা বাঘটিকে ধাওয়া করে ধুনচির জঙ্গলে ফিরিয়েছে ৷
মিলনকান্তি মণ্ডল বলেন, ‘‘বেশ কয়েকদিন ধরে পাথরপ্রতিমা বিভিন্ন জায়গায় বাঘের পায়ের চাপ দেখা যাচ্ছিল ৷ আজ সকালে বেশ কিছু জায়গায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান বন কর্মীরা ৷ তাঁরা পুরো এলাকা জাল দিয়ে ঘিরে ফেলে ৷ বেরনোর পথ না পেয়ে বন কর্মীদের সামনে দেখা দেয় সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার ৷ এরপর বন কর্মীরা বাঘটির পিছু ধাওয়া করতে শুরু করেন ৷ তখন বাঘটি নিজে থেকেই ধুনচির জঙ্গলে পুনরায় ফিরে যায় ৷’’
বাঘ জঙ্গলে ফিরতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন গ্রামবাসীরা ৷ উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরেই পাথরপ্রতিমার শ্রীধর নগর, সিতারামপুর, ইন্দ্রপুর, রাখালপুর-সহ একাধিক জায়গায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যাচ্ছিল ৷ বন দফতর কিছুতেই বাঘ মহাশয়কে বাগে আনতে পারছিল না ৷ রবিবার সন্ধেয় গ্রানমবাসীরা উপেন্দ্রনগরে ঠাকুরান নদীর চরে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান ৷ ফের খবর দেওয়া হয় বন দফতরকে ৷ এবার বাঘ যাতে পালিয়ে যেতে না পারে, তার জন্য রাতেই জঙ্গলে জাল দিয়ে ঘিরতে শুরু করেন বন কর্মীরা ৷
সঙ্গে গ্রামবাসীর মশাল ও লাঠি নিয়ে বাঘের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে ৷ তবে, সোমবার সারাদিন পেরিয়ে গেলেও বাঘ মশাই দেখা দেননি ৷ বন কর্মীরা জানিয়েছিল, বাঘটি সুন্দরবনের কলসে জঙ্গল থেকে নদী পেরিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করেছিল খাবারের সন্ধানে ৷ গ্রামবাসীরা দাবি করেছিলেন, রাতে বাঘের গর্জন শোনা গিয়েছিল ৷ এমনকি দিনের বেলা বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী জঙ্গলের দিকে নদীর পারে বাঘকে জল খেতে দেখেছে ৷ তবে, আজ সকালে নদীর পাড়ে বন কর্মীরা বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পায় ৷ সেটিকে অনুসরণ করে বাঘের অবস্থান বুঝে, ওই এলাকার জঙ্গল জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় ৷ এর কিছুক্ষণের মধ্যে বাঘ বাবাজি জনসমক্ষে বেরিয়ে আসেন ৷ তখন তাকে তাড়া করে ধুনচির জঙ্গলে ফেরানো হয়েছে ৷ বাঘ জঙ্গলে ফিরতেই স্বস্তি ফিরেছে গ্রামবাসীদের মধ্যে ৷