গোসাবা, 2 নভেম্বর: দলের তরফে 50 হাজারের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল । কিন্তু যাবতীয় প্রত্যাশা ছাপিয়ে গেলেন সুব্রত মণ্ডল । গোসাবায় 1 লক্ষ 43 হাজার 51 ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী পলাশ রানাকে পরাজিত করলেন তিনি । একই সঙ্গে গোসাবার নির্বাচনী ইতিহাসেও জায়গা করে নিলেন সুব্রত । কারণ, দক্ষিণ 24 পরগনার নির্বাচনী ইতিহাসে এত বিপুল পরিমাণ ভোটে আগে কখনও কেউ জয়ী হননি ।
বিধানসভা নির্বাচনে গোসাবায় বিজেপিকে ২৩ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করেন জয়ন্ত নস্কর । তাঁর মৃত্যুতে সেখানে উপনির্বাচন করায় কমিশন । তাতে শুরুতে প্রার্থী হিসেবে জয়ন্তর ছেলে বাপ্পাদিত্য নস্করের নাম উঠে আসে । বাপ্পাদিত্যই প্রার্থী হচ্ছেন বলে এলাকার মানুষও ধরে নিয়েছিলেন । কিন্তু শেষ মুহূর্তে সুব্রতর নামেই সিলমোহর দেয় তৃণমূল । এক সময় পঞ্চায়েত প্রধান হিসেবে গ্রামের মানুষের আস্থা অর্জন করেছিলেন সুব্রত । প্রশাসনিক ক্ষেত্রে তো বটেই, দলের অন্দরেও তাঁর সুনাম রয়েছে । তার প্রেক্ষিতে তিনিই বাজিমাত করেন । তা নিয়ে যদিও দলের একাংশ অসন্তুষ্ট ছিলেন বলে শোনা যায় সেই সময় । তবে বিজেপিকে হারাতে একজোটে ঝাঁপিয়ে পড়েন সকলে ।
এদিন ভোটের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর সুব্রতর সমর্থকরা স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত । তবে দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মেনেই সুব্রতর প্রতিক্রিয়া তুলনায় অনেকটাই সংযত । তিনি বলেন, ‘‘এই জয় গোসাবার মানুষের জয় ৷ জয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানবিক প্রকল্পগুলির ৷ গোসাবার মানুষ তৃণমূলের উপর আস্থা রেখেছেন ৷ তাই জিতিয়ে এনেছেন ৷ এখানে আমাদের সংগঠন রয়েছে ৷ বিজেপির তা নেই ৷ বহিরাগতরা শুধু ভোটের সময় এসে ঘুরে গিয়েছেন ৷ মানুষ তাঁদের গ্রহণ করেননি ৷’’
আরও পড়ুন:Gosaba Bypoll : মার্জিন পাঁচগুণ বাড়িয়ে গোসাবা উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল
বিধায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে সবার আগে গোসাবা বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত নদী সংলগ্ন এলাকাগুলিতে বাঁধ সংস্কারের কাজে হাত দেবেন বলে জানিয়েছেন সুব্রত ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার প্রথম কাজ হবে নদীবাঁধ সংস্কার করা ৷ রাস্তাঘাট এবং পানীয় জলের সার্বিক উন্নয়ন ৷ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এলাকাগুলিকে গোসাবার সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে ৷ বিধায়ক নয়, বন্ধু হিসেবে মানুষের পাশে থাকতে চাই ৷’’
তবে সুব্রতর কাছে হেরে ভোট কারচুপির অভিযোগ করেছেন বিজেপি প্রার্থী পলাশ রানা ৷ তাঁর কথায়, ‘‘সত্যিই রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষের জন্য অনেক প্রকল্পের ঘোষণা করেছে । উপনির্বাচনের পর সেই প্রকল্পের তালিকায় নতুন দু’টি প্রকল্পের সংযোজন হল, ছাপ্পাশ্রী এবং রিগিংশ্রী । বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে সরকার ৷ গোসাবার কোনও বুথে ভোট হয়নি । নির্বাচন কমিশনকে প্রত্যেক বুথে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে বলেছি ৷ তাহলেই বোঝা যাবে, সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পেরেছেন কি না । নইলে এ বার থেকে কোটি কোটি টাকা খরচা করে নির্বাচন করার প্রয়োজন নেই । রাজ্যে যে শাসকদল থাকবে, চাদের প্রতিনিধিদেরই বিজয়ী ঘোষণা করে দেওয়া উচিত ৷’’