মানুষকে স্বনির্ভরের চেষ্টা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সুন্দরবন, 1 অগস্ট: সুন্দরবন উপকূল তীরবর্তী এলাকার প্রান্তিক মানুষরা এই 100 দিনের কাজের মাধ্যমে তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করেন। টাকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় 100 দিনের কাজও বন্ধ হয়ে পড়ে ৷ এর ফলে বনদফতরের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ থমকে যায়। 100 দিনের কাজের টাকা না-পেয়ে কার্যত দিশাহারা হয়ে পড়েছেন সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার মানুষরা। এবার সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার মানুষদের স্বনির্ভর করতে এগিয়ে এল এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বন দফতর ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে আবারও পুনরায় সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকায় শুরু হয়েছে ম্যানগ্রোভ লাগানোর কাজ।
বিভিন্ন সময় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বুক চিতিয়ে উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষদের রক্ষা করে এসেছে সুন্দরবনের বাদাবন। সেই বাদবন এখন ধ্বংসের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। ভূমিক্ষয়ের ফলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ম্যানগ্রোভ অরণ্য। গজিয়ে উঠছে মাছের ভেড়ি। এই ম্যানগ্রোভ অরণ্যকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল বন দফতর। 2022-23 বর্ষে বনদফতরের পক্ষ থেকে সুন্দরবন উপকূল তীরবর্তী এলাকায় মোট 5 কোটি ম্যানগ্রোভ চারা রোপণ করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। তা না-হওয়ার অন্যতম কারণ হল 100 দিনের কাজের টাকা বন্ধ।
আরও পড়ুন:শহরে গঙ্গাপাড় ভাঙন রোধে ম্যানগ্রোভ লাগানোর পরিকল্পনা নিচ্ছে কর্পোরেশন
এর ফলে স্বনির্ভর হয়ে উঠছে সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার মানুষরা। গো-ধার্মিক নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ৷ তাতে গ্রামের মহিলারা পুনরায় সেই 100 দিনের কাজ করার সুযোগ ফিরে পেল। এই বিষয়ে গো-ধার্মিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ডিরেক্টর দীপঙ্কর মণ্ডল বলেন, "বিভিন্ন কারণে 100 দিনের কাজ বন্ধ হওয়াতে বন দফতরের বিভিন্ন প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। সংগঠনের পক্ষ থেকে গ্রামের মানুষদের এই ম্যানগ্রোভ চারা রোপণের মাধ্যমে পুনরায় স্বনির্ভর করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।"
এই বিষয়ে এক গ্রামবাসী অর্চনা রাই বলেন, "100 দিনের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সংসার চালানো খুব কষ্টসাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আবারও নতুন করে এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পাশে দাঁড়াতে আর্থিক অনটন কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার মানুষরা।" এই বিষয়ে বন দফতরের আধিকারিক মিলন কান্তি মণ্ডল (ডিএফও) বলেন, "গত বছর সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকাগুলিতে প্রায় পাঁচ কোটি ম্যানগ্রোভ চারা লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল বন দফতর। সেই মতো 100 দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা গ্রামবাসীদের ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ম্যানগ্রোভ চারা লাগানোর কাজ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু মাঝখানে তা বন্ধ হয়ে যায় ৷ সুন্দরবনকে রক্ষা করতে যেভাবে এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভূমিকা পালন করেছে তা সত্যিই অনস্বীকার্য।"
আরও পড়ুন:ম্যানগ্রোভ বাঁচানোর বার্তা নিয়ে সুন্দরবনে আয়ারল্যান্ডের সিনেট ফিক্স